রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলায় নির্মাণ উপকরণ পাথর বোঝাই ট্রাকসহ একটি বেইলি ব্রিজ ভেঙে নদীতে পড়ে গেছে। 

শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে একটি পাথরবোঝাই ট্রাক ব্রিজের উপর দিয়ে পার হওয়ার সময় ব্রিজের মাঝখান বরাবরে এলে ট্রাকসহ বেইলি ব্রিজটি ভেঙে পড়ে। ভেঙে পড়া জরাজীর্ণ ব্রিজটি অতিরিক্ত মালামাল পরিবহনের কারণে ভেঙে পড়ে। এ ঘটনায় পর উপজেলা শহর ও নাইল্যাছড়ি এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের রাঙ্গামাটি কার্যালয় সূত্র জানায়, মাত্রাতিরিক্ত ভারবাহী ট্রাকটির কারণে পুরনো বেইলি ব্রিজটি ভেঙে পড়েছে। কাউখালী উপজেলার পোয়াপাড়ায় অবস্থিত ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ১৪৫ ফুট এবং প্রস্থ ১৪ ফুট। প্রায় চল্লিশ বছর আগে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছিলো। সর্বশেষ ২০ বছর আগে একবার সেতুটিতে দুর্ঘটনায় ঘটায় মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করে তোলা হয়।

কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহীদউল্লাহ জানান, পোয়াপাড়ায় অবস্থিত বেইলি ব্রিজটির উপর দিয়ে কাউখালীতে নির্মাণ কাজ চলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ব্যবহারের জন্য নির্মাণ উপকরণ পাথর নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ট্রাকে করে। কিন্তু পাথরবোঝাই ট্রাকটি ব্রিজের মাঝামাঝিতে ভেঙে নদীতে পড়ে গেছে। এ ঘটনায় ট্রাক চালকসহ তিনজন আহত হয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসার জন্য শুক্রবার রাতে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খুব বেশি সমস্যা হয়নি কারো। বর্তমানে কাউখালী-নাইল্যাছড়ি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

কাউখালী উপজেলার বাসিন্দা মো. জসীম উদ্দিন জানান, ব্রিজটির উপর দিয়ে কলমপতি ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার পাহাড়িরা নানা কৃষিপণ্য নিয়ে বাজারে আসেন। এটি মেরামত না হওয়া অবধি কারণে সাপ্তাহিক হাটসহ স্থানীয় জনজীবনে দুর্ভোগ বাড়বে।

এদিকে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ রাঙ্গামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ্ আরেফিন জানান, এ  ধরণের বেইলি ব্রিজের সর্বোচ্চ ভার ধারণ সক্ষতা ১০ টন। কিন্তু যে ট্রাকটিতে করে নির্মাণ উপকরণ পাথর নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো। সেটি ভার প্রায় ৩৫ টনের মতো হবে। যা সক্ষমতার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি, তাই বেইলি ব্রিজটি ভেঙে পড়েছে। 

প্রকৌশলী জানান, ব্রিজটি সংস্কার করে আবারো চালু করতে অন্তত দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।এ ধরণের বেইলি ব্রিজে ঝুঁকি এড়াতে ওভারলোডেড যান চলাচল না করার অনুরোধ করেছেন তিনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় চার দশক আগে কাউখালী উপজেলায় গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজটি নির্মিত হলেও স্থায়ী সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে ভারী যানবাহন চলাচলায় ঝুঁকিতে পড়ে ব্রিজটি। তবে নতুন করে আবারো পাটাতন বসিয়ে সড়ক সংযোগ চালু করা হলেও ঝুঁকিতেই থাকবে ব্রিজটি। তাই ঝুঁকি এড়াতে স্থায়ী সেতু তৈরির দাবি করছেন স্থানীয়রা। এদিকে জেলার অন্যান্য সড়কে নির্মিত বেইলি ব্রিজগুলো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। 

উল্লেখ্য যে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের কুতুকছড়ি এলাকায় রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা ও নানিয়ারচর উপজেলার সীমান্ত সংযোগ কুতুকছড়ি বেইলি ব্রিজটিও পাথরবোঝাই ট্রাকসহ ভেঙে পড়ে। এ ঘটনায় ট্রাকচালক-সহকারীসহ তিনজনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।