Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

তিস্তার দুর্গম চরাঞ্চলে সৌরবিদ্যুৎ

সেপ্টেম্বর থেকে উৎপাদন শুরু

Icon

এস কে সাহেদ, লালমনিরহাট

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪:২৬

সেপ্টেম্বর থেকে উৎপাদন শুরু

তিস্তার দুর্গম চরাঞ্চলে সৌরবিদ্যুৎ

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নে অবস্থিত তিস্তা শৈলমারী চর। এ চরে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের বসবাস। এসব মানুষের কষ্ট দূর করার জন্য বর্তমান সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় গত বছর কালীগঞ্জ উপজেলার ওই শৈলমারী চরে ৩০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়ার লিমিটেড কোম্পানি।

সেইসঙ্গে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত কোটি কোটি টাকা মূল্যের ভারী যন্ত্রপাতি পরিবহন করতে তৈরি করা হয় রাস্তা, সেতু ও কালভার্ট। আর এভাবেই পাল্টে যাচ্ছে তিস্তা চরের চিত্র। সৌরবিদ্যুৎ চালু হলে আলোয় আলোকিত হবে তিস্তা চর। 

এ দিকে ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়ার লিমিটেড স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা প্রশাসন ও সরকারের উচ্চ মহলের সঙ্গে আলোচনা করে চর এলাকায় দুটি বেইলি সেতু, ১৮টি কালভার্ট নির্মাণ করে এবং নদীভাঙন থেকে রক্ষার জন্য দীর্ঘ ৪ কিলোমিটার এলাকা সাই ওয়াল নির্মাণকাজ শুরু করেছে। চরের কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে বিদ্যুতের খুঁটি বসিয়ে তার সংযোগ করে বিদ্যুৎ নিয়ে যান ওই দুর্গম চরাঞ্চলে। ফলে অন্ধকারে আচ্ছন্ন ভোটমারী ইউনিয়নের ১ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ এখন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে। অবরুদ্ধ শৈলমারী চরবাসীসহ তিস্তার অন্যান্য চরের মানুষের জীবনযাত্রা পাল্টে যাবে। টেলিভিশন দেখাসহ বিভিন্ন আধুনিক সুবিধা ভোগ করবে চরবাসী। করোনার মহামারির এই দুঃসময়ে সোলার প্রকল্পে চরের ৫০০ থেকে ৬০০ শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করছেন। মিলছেও ভালো মজুরি। 

চরের বাসিন্দা দবিয়ার রহমান বলেন, দীর্ঘদিন এই বালু চরে আছি কেউ খোঁজ নেয়নি। আমাদের কষ্ট ছিল বারোমাস। সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটি এসে আমাদের ভাগ্য খুলছে। চরের রাস্তা নির্মাণ হওয়ায় খুব সহজে আমরা এখন উপজেলা সদরে যেতে পারছি। 

শৈলমারী চরের বাসিন্দা দেলদার মুন্সী, ওয়াহেদুল ইসলাম ও আব্দুল জব্বার বলেন, এখানে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটি তাদের জন্য আশীর্বাদ বয়ে এনেছে। এ প্রকল্পের কারণে স্বপ্নের পাকা রাস্তা, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মিত হয়েছে। তাদের বাড়িতে কেউ অসুস্থ হলে দ্রুত তারা উপজেলা বা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারছেন। সহজেই তাদের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়ার জন্য শহরে যেতে পারবেন। কর্মসংস্থানের জন্য তারাও সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছুটতে পারবেন। আর বিদ্যুৎ পেলে তাদের এই চরেই ছোট ছোট মিল, কারখানা গড়ে উঠবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে চরের হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। 

ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়ার লিমিটেডের প্রকল্প ডিরেক্টর (অপারেশন) আব্দুল হালিম জানান, বিদ্যুৎ সংকট দূর করতে বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপ হচ্ছে এই সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প। এখান থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে মূল গ্রিডে সংযুক্ত করা হবে। আর এভাবেই কেটে যাবে লোডশেডিংসহ বিদ্যুতের সংকট। তিস্তার পানি প্রবাহে যাতে কোনো বাধা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য দুটি বেইলি সেতু ও ১৮টি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। আগামী মাস থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।

এ বিষয়ে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন থেকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫