নিখোঁজের ২২ বছর পর বাড়ি ফিরলেন আমেনা বেগম

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:২৫

নিখোঁজ আমেনা বেগম
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় দীর্ঘ ২২ বছর পর মৃত মাকে খুঁজে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেছে সন্তানেরা। ১৯৯৯ সালে অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় তিনি। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। তার সন্তানেরাও মাকে এতদিন মৃতই জানতেন। তাই তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রেও মৃত হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
অবশেষে সেই নিখোঁজ মা আমেনা বেগম নেপাল থেকে দীর্ঘ ২২ বছর পর বাড়িতে ফিরেছেন। তবে এখন তার বছর প্রায় ৮০ বছর। তার বাড়ি ধুনট উপজেলার নিমগাছি ইউনিয়নের মাজবাড়ি গ্রামে।
বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে নেপাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছান ধুনটে সেই নিখোঁজ গৃহবধূ আমেনা বেগম। আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে তার স্বজনদের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। সোমবার রাতেই সন্তানদের সাথে ধুনটের নিজ বাড়িতে ফিরেছেন আমেনা।
এদিকে মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) নিখোঁজ আমেনার বাড়ি ফেরার সংবাদ শুনে দূর দূরান্ত থেকে শত শত মানুষ তার বাড়িতে ভিড় করছেন। প্রায় দুই যুগ পর মায়ের মুখ দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেছে সন্তান ও স্বজনরাও।
এদিকে বড় বোনের অপেক্ষায় ছিলেন ধুনটের ছোট চাপড়া গ্রামের ছোট বোন আম্বিয়া। তিনি বলেন, আল্লাহ সরকারকে ভালো করুক। সরকারের কারণে এতো বছর পর বোনকে ফিরে পেলাম।
আমিনা বেগমের ছেলে ফটিক জানান, ভেবেছিলাম মা মারা গেছে। এতদিন পর মাকে পেলাম। এর চেয়ে খুশির খবর আর কি হতে পারে।
তিনি জানান, হাই-কমিশনের মাধ্যমে সোমবার দুপুর ১ টায় ঢাকা বিমান বন্দরে নিয়ে আসেন আমার মাকে। ডিজিটাল বাংলাদেশ না হলে মাকে খুঁজে পেতাম না। ফেসবুকের সুবাদেই আজ খুঁজে পেলাম। শুক্রবারেও ভিডিও কলে মার সাথে কথা হয়। সেখানে নেপালী অধিবাসীও ছিলো। ভিডিও কলে আশ্রয়দাতা নেপালীদের ধন্যবাদও জানানো হয়।
আমেনার বড় ছেলে আমজাদ হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, আমার শাশুড়ি মানষিক রোগী ছিলেন। পাগলের মত ঘুরে বেড়াতো। তাকে পাবনা মানষিক হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়েছিল।
ছোট ছেলে ফরাইজুল জানায়, হঠাৎ করেই গত জুন মাসে খবর আসে ‘মা’ বেঁচে আছেন। নেপালের সানসুরি জেলার ইনারুয়া পৌরসভা এলাকায় তার সন্ধান মিলেছে। এরপর ভিডিও কলে মার সাথে কথা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় মাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।