Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

ডেঙ্গুর হটস্পট জুরাইন, আক্রান্ত ৪৫%ই শিশু-কিশোর

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪:১০

ডেঙ্গুর হটস্পট জুরাইন, আক্রান্ত ৪৫%ই শিশু-কিশোর

ফাইল ছবি

পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ক্রমেই বাড়ছে আক্রান্ত  মৃত্যুর সংখ্যা। এর মধ্যে যাত্রাবাড়ী, দোলাইরপাড়, শনির আখড়া, জুরাইন ও মুরাদপুর ডেঙ্গুর হটস্পট হিসেবে পরিণত হয়েছে। জুরাইনের অবস্থা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এই এলাকায় গত আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত আট জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর। 

জানা গেছে, এই এলাকাটি অপেক্ষাকৃত নিচু হওয়ায় এখানকার বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টিে পানি জমে জন্ম নিচ্ছে এডিস মশা। ফলে মশক নিধন পদ্ধতি এখানে তেমন কাজ করছে না বলে জানান স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কাবিরুল বাশার বলেন, জুরাইনের যে বাড়িগুলো আছে, সেগুলোর নিচতলা রাস্তার থেকেও প্রায় এক কোমর নিচে। বর্ষা মৌসুম হওয়ায় এসব বাসার নিচতলায় পানি জমে গেছে এবং এই জায়গাগুলোতেই বেশি এডিস মশা হচ্ছে। এটাই হচ্ছে জুরাইনের মূল সমস্যা।

এদিকে, দেশে করোনা রোগীর পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগীও বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৮৭৫ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১২ হাজার ৫৬১ জন এবং মারা গেছেন ৫৪ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য বলছে, গতকাল পর্যন্ত ঢাকার সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি ছিল এক হাজার ৫২৯ জন। সেখানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা উঠে গেছে এক হাজার ৭৯ জনে। এক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালে বেশি করোনা রোগী আর বেসরকারিতে বেশি ডেঙ্গু রোগী। সরকারি হাসপাতালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী রয়েছে মিটফোর্ড হাসপাতালে। আর সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী রয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রশিদ উন নবী বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে এ বছর সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এখনো প্রতিদিন অন্য হাসপাতালের চেয়ে এখানে বেশি রোগী আসছে। বড়দের পাশাপাশি শিশু ডেঙ্গু রোগীও আছে। বিশেষ করে আজ (গতকাল) মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ২৪৮ জন। তাদের মধ্যে ৩৮ জনই শিশু।’

তিনি বলেন, ডেঙ্গু রোগী আগের তুলনায় বেড়েছে। যদিও এত দিন অন্য হাসপাতালগুলোতে করোনার রোগীর চাপ বেশি থাকায় ডেঙ্গু রোগীরা বেশির ভাগই এখানে আসত। এখন অন্য হাসপাতালেও যাচ্ছে।

শিশু রোগীদের তথ্যের সঙ্গে অধ্যাপক ডা. সৈয়দ শফি আহম্মেদের কথার প্রতিফলন দেখা যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণেও। ওই তথ্য অনুসারে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৩১৯ রোগীর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৫.৮ শতাংশ রোগীর বয়স এক থেকে ১০ বছরের মধ্যে। এরপর ২২.৭ শতাংশের বয়স ২১-৩০ বছর, ১৯.১ শতাংশের বয়স ১১-২০ বছর, ১৬ শতাংশের বয়স ৩১-৪০ বছর, ৬.৩ শতাংশের বয়স ৪১-৫০ বছর, ৫.৯ শতাংশের বয়স ৫১-৬০ বছর এবং ষাট বছরের ওপরে রয়েছে ৪.৩ শতাংশ রোগী।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গু রোগীর বিস্তার খুব দ্রুত ঘটছে। সবাইকে সতর্ক থাকা উচিত। শুধু করোনা নিয়ে থাকলে হবে না, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আরো জোরালোভাবে কাজ করতে হবে। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে সুরক্ষার বিষয়ে মানুষকে আরো সচেতন হতে হবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫