সীমান্তের গ্রাম খাড়ামুড়ার দুঃখ সোমেশ্বরী নদী

শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:৫০

খাড়ামুড়া গ্রামের চার হাজার মানুষের দুঃখ সোমেশ্বরী নদী। ছবি : শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার রানিশিমুল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী খাড়ামুড়া গ্রামের চার হাজার মানুষের দুঃখ সোমেশ্বরী নদী। নদীটির দুইটি শাখা ভারত থেকে নেমে গ্রামের দুইপাশ দিয়ে প্রবেশ করে বালিজুরি গ্রামে এসে এর মিলন ঘটেছে।
ফলে গ্রামটির উত্তরে ভারত ও আর তিন পাশে নদী থাকায় অনেকটা দ্বীপের মতো হয়েছে এর অবস্থান। খাড়ামুড়া গ্রাম থেকে পশ্চিমে রাঙ্গাজান গ্রামে যেতে হলে এ নদী পাড়ি দিয়ে যেতে হয়। দক্ষিণে বালিজুরি ও পূর্বপাশে তাওয়াকুচা গ্রামে যেতে হলেও এ নদী পারি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উত্তরে ভারত সীমান্ত ঘেঁষা এ গ্রামটির দিকে তাকালে যে কারো মনে হবে এ যেন একটি সিটমহল। ছোট-বড়, নারী-পুরুষ আবাল-বৃদ্ধা-বনিতাসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রায় ৪ হাজার লোকের বসবাস।
জানা যায়, শ্রীবরদী উপজেলা সদর থেকে খাড়ামুড়া গ্রামের দুরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এ গ্রামবাসীদের দুঃখ-দুর্দশার যেন শেষ নেই। রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। শিক্ষা-দীক্ষায় ওই গ্রামবাসীরা রয়েছে অনেক পিছিয়ে। অভাব-অনটন, দুঃখ আর দুর্দশাই গ্রামবাসীদের নিত্যসঙ্গী। সোমেশ্বরী নদীর উপর একটি সেতু না থাকায় গ্রামবাসীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সারা বছর এ গ্রামের লোকজনদের নদী পারাপার হতে হয় কখনো নৌকা, কখনো কলার ভেলা, আবার কখনো বাঁশের সাঁকোযোগে। এভাবে নদী পারাপারের সময় শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের লোকজনকে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনারও শিকার হতে হচ্ছে। এছাড়া এলাকায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য ও গবাদি পশু পারাপারে কৃষকদের নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে।
বালিজুরি গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা মো. নুর ইসলাম ও খাড়ামুড়া গ্রামের লোকজন জানান, দেশ স্বাধীনের পর থেকে এ নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি উঠে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে। বিভিন্ন সময় আশ্বাসও পাওয়া গেছে। কিন্ত আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এ নদীর উপর সেতু না থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কোনো রোগী হাসপাতালে নেয়ার প্রয়োজন হলে তা নেয়া আর সম্ভব হয় না।
রানিশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা বলেন, এ নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের বিষয়ে উপজেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় বিভিন্ন সময় আবেদন-নিবেদনও করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় আশ্বাসও পাওয়া গেলেও আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি। খাড়ামুড়া গ্রামবাসীর সবচেয়ে বড়ো দুঃখ সোমেশ্বরী নদী। তিনি এ নদীর উপর জরুরি ভিত্তিতে একটি সেতু নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
শ্রীবরদী উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, সোমেশ্বরী নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের জন্য নকশা ও মাটি পরীক্ষার কাজ চলছে। পরীক্ষার কাজ শেষে প্রকল্প প্রণয়ন করে সংশ্লিষ্ট অধিদফতরে পাঠানো হবে। অনুমোদন পাওয়া গেলেই সেতু নির্মাণের প্রস্তুতি নেয়া শুরু হবে।