অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক নিয়োগ: হাইকোর্টের রুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২২:৫৯

সুপ্রিম কোর্ট ভবন। ফাইল ছবি
জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেস্থেসিয়া) হিসেবে চিকিৎসক নিয়োগ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জুনিয়র কনসালটেন্ট নিয়োগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২৮ জুনের গেজেট কেন বাতিল করা হবে না, তা-ও জানতে চেয়েছেন আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
৫৬ জন চিকিৎসকের করা এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলুরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
গত ১২ সেপ্টেম্বর জারি করা রুলের লিখিত আদেশ সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী দেবজীত দেবনাথ।
ওই দিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম খান (জেডআই) পান্না। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী দেবজীত দেবনাথ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত ও মো. লুকমান হোসাইন। সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অপূর্ব কুমার বিশ্বাস।
জুনিয়র কনসালটেন্ট নিয়োগ পরীক্ষা গত ২০ ও ২১ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয়। ২২ আগস্ট ফলাফল প্রকাশ করা হয়। তারপর গত ৫ সেপ্টেম্বর গেজেট প্রকাশ করা হয়।
এর আগে করা রিট আবেদন শুনানি নিয়ে গত ১৭ আগস্ট চার সপ্তাহের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করেন আদালত। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে ওই পদে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ে যায়। তারপর গত ১২ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ওসমানী মিলনায়তনে উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের যোগদান সম্পন্ন করা হয়। এখন তাদের পোস্টিং দেওয়া হচ্ছে।
রিটকারী আইনজীবী দেবজীত দেবনাথ জানান, রিট আবেদন করার পর প্রথম শুনানিতে গত ১৭ আগস্ট চার সপ্তাহের জন্য রিটটি মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) রেখেছিলেন আদালত। এর মধ্যে পিএসসি তড়িঘড়ি করে পরীক্ষা নিয়ে পরের দিনই রেজাল্ট দিয়ে দেয়। ২০ ও ২১ আগস্ট পরীক্ষা হয়। শুধুমাত্র মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের মতো সংবেদনশীল বিষয়ে নিয়োগ, তা-ও একেবারে ষষ্ঠ গ্রেডের কনসালটেন্ট পদে!
আইনজীবী বলেন, কথা ছিল করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৪০৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ দেবে সরকার। কিন্তু এখন তাদের দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ষষ্ঠ গ্রেডের এ পদে শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে এসব চিকিৎসককে জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেস্থেসিয়া) হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য বিসিএস নিয়োগ বিধিমালা-১৯৮১ সংশোধন করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে চিকিৎসকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আইনজীবী বলেন, যারা ২৫তম থেকে সর্বশেষ বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, স্বাস্থ্য ক্যাডারে সারাদেশে সরকারি হাসপাতালে নিয়োজিত অনেকে ১৫ বছর পার করলেও পদোন্নতি না পেয়ে নবম গ্রেডেই রয়েছেন। তাদের সুযোগ না দিয়ে শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে সরাসরি ষষ্ঠ গ্রেডে নিয়োগ দিয়ে এ ক্যাডারে বড় ধরনের বৈষম্য তৈরি করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ক্যাডারে কর্মরত একাধিক চিকিৎসক অভিযোগ করেছেন, পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা যাদের আছে, তাদের ষষ্ঠ গ্রেডে নিয়োগ দেওয়া হলে বর্তমান চাকরিতে যারা অ্যানেস্থেসিয়া বিষয়ে পোস্ট-গ্র্যাজুয়েশন করে নবম গ্রেডে মেডিকেল অফিসার পদে আছেন তারা কোথায় যাবেন? নতুনদের ষষ্ঠ গ্রেডে যোগদান করালে সিনিয়র চিকিৎসকরা জুনিয়র হবেন, আর জুনিয়ররা সিনিয়র হয়ে যাবেন।