
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অবস্থান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘রিফিউজি থাকলে কিছু লোকের মনে হয় একটু লাভই হয়। তারা এখানে রোহিঙ্গাদের জন্য কিছু করার বিষয়টি যত বেশি দেখে, প্রত্যাবাসনের দিকে তত নজর দেয় না। অনেক প্রস্তাব আমরা পাই; এটা করা হোক—ওটা করা হোক। সঙ্গে সঙ্গে আমরা বলি—করেন, মিয়ানমারে করেন। আমার এখানে করার তো দরকার নেই। ওদের নিয়ে যান। আমরা এখানে যেটুকু করার আমরা করি।’
সোমবার (৪ অক্টোবর) জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদানের ওপর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘রোহিঙ্গারা এলে প্রথমে তো আমরা কয়েকমাস নিজেদের অর্থ দিয়েই চালালাম। তারপর আস্তে আস্তে আন্তর্জাতিক সংস্থা এসেছে। কিন্তু তার আগ পর্যন্ত তো আমরা চালিয়েছি। ৪০ হাজার অন্তঃসন্ত্বা নারী ছিল, তাদের ডেলিভারি থেকে শুরু করে সব তো আমরাই করেছি। আমাদের কাছে যখনই আন্তর্জাতিক সংস্থা ওরকম দাবি করে, আমি সোজা বলে দেই, মিয়ানমারে নিয়ে যান। ওখানে ঘর করেন, স্কুল করেন, হাসপাতাল করেন। আমার এখানে করা লাগবে না। এখানে যেটা করার সেটা তো আমি করেই দিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার ধারণা, সবকিছুতেই যেন একটা ব্যবসা। এর মধ্যে কিছু আছে আন্তরিক, কিছু আছে শুনে যায়— সমস্যাটা এখানেই। ১৯৯২ সাল থেকেই তারা (রোহিঙ্গারা) আছে। ৩ লাখের মতো ছিল। বাকিরা চলে গেল। পরে আসলো ৭-৮ লাখ। ১১ লাখে দাঁড়াল। আর পাকিস্তানি শরণার্থী তো সেই ১৯৪৮ সাল থেকেই আছে। তাদের তো আর ফেরতই নিলো না। সেটা আবার সবাই ভুলেও গেছে যে, আমরা আরও এক বিশাল অঙ্কের শারণার্থী পালন করছি। তারা হলো পাকিস্তানের শারণার্থী। পাকিস্তান তাদের নেয় নাই। নেবেও না। আর রোহিঙ্গাদের কোনো আগ্রহ আছে বলে মনে হয় না।’
তিনি বলেন, ‘এখন যেহেতু একটা পরিবরতন এসেছে আমি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে বলেছি, আপনারা এই সময়ে কেন চাপ দেন না? কারণ এরা আমাদের পুরো পরিবেশটাকেই নষ্ট করেছে। আমরা ছোটবেলায় উখিয়া গিয়েছিলাম, সেখানে ছিল গভীর জঙ্গল, পাহাড়ি পথ ধরে যেতে হয়েছে। চারিদিকে কোথাও বাঘের পায়ের ছাপ, কোথাও হাতির পায়ের ছাপ; আমরা নিজেরাই দেখেছি। আর সেই জায়গা এখন ন্যাড়া মাথা হয়ে গেছে, জঙ্গলের চিহ্ন নেই।’