Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

শেরপুরে ফের সক্রিয় নিম্নমানের চালের সিন্ডিকেট

Icon

প্রতিনিধি, শেরপুর

প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ২০:৫১

শেরপুরে ফের সক্রিয় নিম্নমানের চালের সিন্ডিকেট

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা সরকারি খাদ্য গুদামে নিন্মমানের চাল সরবরাহ করা সিন্ডিকেট আবারো সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। 

অভিযোগ উঠেছে, গুদামের ওসিএলএসডির (ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা) আয়মান বিনতে ফেরদৌস নূপুরকে নিন্ম মানের চাল নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে ব্যর্থ হয়ে চক্রটি এখন নূপুরকে বদলি করাসহ  হুমকি দিচ্ছে।

সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ঝিনাইগাতী উপজেলা এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নূপুর যোগদান করেন। যোগদান করে খাদ্য গুদামের তৎকালিন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দেবনাথের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নিতে গিয়ে দেখতে পান ওই গুদামের বেশীরভাগ চাল নষ্ট। 

বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তাৎক্ষণিক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। এর মধ্যেই অভিযুক্ত বিকাশ চন্দ্র দেবনাথ  ৬শ ৪৩ মেট্রিক টন পচাঁ চাল গুদাম থেকে বের করে সমপরিমান ভালোমানের চাল ওই গোডাউনে সরবরাহ করেন। তবে ৯শ টন পচা চাল সরানো যায়নি। তদন্তে বিষয়টির সত্যতা পান কমিটি। 

ততোক্ষণে বিষয়টি খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের নজরে আসলে বিকাশ দেবনাথকে গত ৮ সেপ্টেম্বর  সাসপেন্ড ও অন্যান্য সকলকেই তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়। দেবনাথের স্বীকার উক্তি মতে, খারাপ চাল সরবরাহের দায়ে ওই উপজেলার ১০টি মিলকে কালো তালিকাভূক্ত করে খাদ্য বিভাগ।

সূত্র জানায়, ঝিনাইগাতীর মিল মাালিকদের একটি অসাধু সিন্ডিকেট বিকাশ চন্দ্র দেবনাথের সাথে যোগসাজশ করে ওই গোডাউনে নিন্মমানের চাল দীর্ঘ দিন ধরে সরবরাহ করে আসছিলেন। এরই ধারাবহিকতায় ওই সিন্ডিকেট নতুন এই কর্মকর্তাকে আগের মতো চাল গ্রহণ করতে ব্যাপক চাপ দেয়। কিন্তু বর্তমান কর্মকর্তা নূপুর অস্বীকার করায় ট্রাক ভর্তি চাল গুদাম থেকে ফেরৎ যায়। 

এদিকে অভিযোগ উঠেছে এই ঘটনার পর থেকে চক্রটি এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে মিলারদের একাংশের স্বাক্ষর নিয়ে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে বদলি করার চেষ্ঠা চলাচ্ছে। 

এ বিষয়ে জানাতে চাইলে নূপুরের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীদের অন্যতম একজন মেসার্স জাকির চাল কলের স্বত্বাধিকারী জাকির হোসেন মুঠোফোনে জানান, আমরা হাসকি মিলের চাল দিতে গেলে বর্তমান কর্মকর্তা গ্রহণ করে না, অটো মিলের চাল আনতে বলেন। এতে আমরা লোকসানের মুখে পড়েছি। তিনি আরো বলেন, ভালো চাল দিতে গেলেও ওই কর্মকর্তা ঘুষ দাবি করেন। 

এদিকে উপজেলা মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: আসলামের সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোন কথা বলতে রাজি হননি। 

সাধারণ মিল মালিক মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক, আবুল বাশার, আব্দুল কাফি জানান, আমরা মিটিংয়ে উপস্থিতির জন্য স্বাক্ষর করেছি, আমরা কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিখিত দেইনি। 

তবে মিল মালিকদের আরেক অংশ জানিয়েছে, আমাদের ভুল বুঝিয়ে স্বাক্ষর নিয়েছে- এই মর্মে আমরা লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।    

ঝিনাইগাতীর ওসিএলএসডি নূপুর বলেন, আমি সরকারের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে চক্রের তোপের মুখে পড়েছি। আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, লিখিত অভিযোগ দিচ্ছে। আমি এখানে নতুন অনেককে চিনিই না। ঘুষ নেওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না দাবি করে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে বলেন।

এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফরহাদ খন্দকার জানান, আমরা বর্তমান ঝিনাইগাতীর ওসিএলএসডির অনিয়ম দেখছি না। একজন কর্মকর্তা কাজ শুরুই করেননি অথচ তিনি দুর্নীতি করেছেন তাকে বদলি করতে হবে-এটা প্রশ্নই আসে না। অভিযোগ কেউ করতেই পারে সরকার দেখবে কর্মকর্তা আইনের মধ্যে আছে কিনা। 

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা খাদ্য ক্রয় কমিটির সভাপতি রুবেল মাহমুদ জানান, এখানে চাল সংগ্রহে কোনোভাবেই সিন্ডিকেট তৎপরতা মেনে নেওয়া হবে না। সরকারি চাকরিতে বদলি আছে তবে বর্তমান ওসিএলএসডি যদি হুমকিতে থাকেন তিনি চাইলে হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া  হবে।   

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫