নদীমাত্রিক অঞ্চল বরিশাল। কীর্তনখোলা, মেঘনা, বিঘাই, পায়রা, সন্ধ্যা ও আড়িয়ালখাঁসহ বেশ কিছু নদী ঘিরে রেখেছে এ জেলাকে। 

ফলে বর্ষা মৌসুম কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলেই আতঙ্কে থাকতে হয় নদীর তীরবর্তী মানুষগুলোকে। কেননা নদীগুলোর তীব্র ভাঙন গিলে খাচ্ছে গোটা বরিশাল জেলাকে। এরই মধ্যে ভায়াবহ ভাঙনে মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে অনেক গ্রাম। বিলীন হয়েছে স্থাপনা, ফসলি জমি ও বসতভিটা। তবে বছরের পর বছর নদীর ভাঙন অব্যাহত থাকলেও, তা রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

ভাঙন প্রতিরোধে শুধু প্রকল্পতেই আটকে আছে তারা। তিন-চার বছর পূর্বে নেওয়া প্রায় চার হাজার কোটি টাকার প্রকল্পগুলো, যা এখনো পৌঁছায়নি মন্ত্রণালয়ে। এমনকি কবে নাগাদ প্রকল্পগুলো ভাঙন রোধে বাস্তবে রূপ নেবে তাও সুস্পষ্ট করে বলতে পারছে না কেউ।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ বছর ধরে কীর্তনখোলা, আড়িয়ালখাঁ, কালাবদর. বিঘাই, মেঘনা, সুগন্ধা ও সন্ধ্যা নদীর তীর ভাঙছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব নদীর ভাঙন ঠেকাতে প্রায় তিন থেকে চার বছর পূর্বে পৃথক পাঁচটি প্রকল্প গ্রহণ করে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর সর্বমোট প্রকল্প ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে তিন হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা, যার মধ্যে রয়েছে ব্লক বাঁধ এবং ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদী শাসন। প্রায় চার বছর পেরিয়ে গেলেও একটি প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি। এদিকে বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুক শামীম পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলে স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলেন এই অঞ্চলের মানুষ। 

বাবুগঞ্জ উপজেলার জন্য গৃহীত ১১শত কোটি টাকার প্রকল্পটিও একই পর্যায়ে রয়েছে। এটিও আগামী এক মাসের মধ্যে চূড়ান্ত এডিপি জমা দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী। 

প্রকল্পে ধীরগতির বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, ‘প্রকল্প চাইলেই তৈরি করা যায় না। এটার কতগুলো ধাপ আছে, যা পার করতে সময়ের প্রয়োজন। একটি প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয় পর্যন্ত পাঠাতে কম করে হলেও, দেড় থেকে তিন বছর সময় লেগে যেতে পারে।’