বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ইমরান শরীফ ও জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো দম্পতির তৃতীয় সন্তানকে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। শিশুদের বাবা ইমরান শরীফ এ রিট দায়ের করেছেন। এই দম্পতির তৃতীয় সন্তান বর্তমানে জাপানে রয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এই রিট আবেদনটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় রয়েছে।

ইমরান শরীফের অন্যতম আইনজীবী ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট আদেশ দেন, রাজধানীর গুলশানের ফ্লাটে দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনার সঙ্গে জাপানি নাগরিক মা নাকানো এরিকো রাতসহ ২৪ ঘণ্টা থাকবেন। বাবা ইমরান শরীফ শুধু দিনে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। এই সময়ে ওই ফ্লাটের ভাড়া শিশুদের মা-বাকে সমানভাবে বহন করতে হবে।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর শিশুদের নিয়ে মা-বাবাকে সমঝোতার সুযোগ দিয়েছিলেন আদালত। ওই দিন ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই মামলা মুলতবি করেছিলেন আদালত। এ সময়ে পর্যায়ক্রমে গুলশানের বাসায় একদিন করে মা ও একদিন করে বাবা শিশুদের সঙ্গে থাকার কথা বলা হয়।

গত ৩১ আগস্ট হাইকোর্ট আদেশ দেন বাবা-মাসহ রাজধানীর গুলশানের চার কক্ষবিশিষ্ট একটি বাসায় থাকবে দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা। সেখানে তারা আপাতত ১৫ দিন থাকবে। ফ্লাটের ভাড়া উভয়পক্ষ বহন করবে। সমাজসেবা অধিদফতরের ঢাকার ডেপুটি ডিরেক্টর তাদের তত্ত্বাবধান করবেন। প্রয়োজনে এ কর্মকর্তা ওই ফ্ল্যাটে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। গুলশানের বাসায় থাকাকালীন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) বলা হয়।

এরিকো (৪৬) পেশায় চিকিৎসক। চলতি বছরের ১৮ জুলাই তিনি বাংলাদেশে আসেন। এরিকোর সাথে ২০০৮ সালে শরীফ ইমরানের (৫৮) জাপানি আইন অনুযায়ী বিয়ে হয়। টোকিওতে বাসবাস শুরু করেন। তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে— জেসমিন মালিকা (১১), মাকানো লাইলা লিনা (৯) ও সানিয়া হেনা (৬)। এরা তিনজনই টোকিওর চফো সিটিতে অবস্থিত আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের শিক্ষার্থী ছিলেন।

জাপানের আদালতে এ বছরের ১৮ জানুয়ারি শরীফ ইমরান এরিকোর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের (ডিভোর্স) আবেদন করেন।  কিন্তু নির্ধারিত শুনানির তারিখে ইমরান আদালতে হাজির হননি। ইমরান ২১ ফেব্রুয়ারি তার দুই কন্যা জেসমিন মালিকা ও মাকানো লাইলা লিনাকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। এরিকো তার দুই সন্তানকে আদালতে হাজির করার আবেদন করেছেন।

আবেদনে তিনি আরো উল্লেখ করেছেন, শরীফ ইমরান তার কন্যাদের নিয়ে এসে এবং যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হয়রানি করেছেন।

আইনি প্রতিকারের আশায় হাইকোর্টে দুই মেয়ের জিম্মা চেয়ে রিট দায়ের করেন জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো। রিট আবেদনে দুই শিশুকে তাদের মা এরিকোর জিম্মায় দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়।