রাঙ্গামাটিতে কলেজছাত্রী পূর্ণিমা চাকমার রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ এনে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (১ নভেম্বর) রাতে রাঙ্গামাটির কোতোয়ালি থানায় অভিযোগটি দায়ের করেন পূর্ণিমার মামাতো ভাই পলাশ চাকমা।

কোতোয়ালি থানার ওসি মো. কবির হোসেন অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, কলেজছাত্রী পূর্ণিমা চাকমার এক আত্মীয় অভিযোগ জমা দিয়েছেন। সেটা আছে এবং আগেই একটি অপমৃত্যু মামলা আছে। পুলিশ তদন্ত করছে ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে বিষয়টি আর পরিস্কার হবে।

মামলার অভিযোগে পলাশ বলেন, ‘গত শুক্রবার দুপুর দেড়টায় (২৯ অক্টোবর) মল্লিকা দেওয়ান ও অঞ্জলী চাকমা আমার বোন পূর্ণিমা চাকমার লাশ রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে বলে অপপ্রচার চালাতে থাকে। পরে আমি পূর্ণিমার গৃহকত্রী মল্লিকা দেওয়ান ও নিকিতা দেওয়ানের কাছে মৃত্যুর বিষয়টি জানতে চাইলে তাদের রহস্যজনক উত্তর ও আচরণে বুঝতে পারি আমার বোনকে খুন করা হয়েছে।’

পলাশ বলেন, ‘আমার বোনকে খুন করে আত্মহত্যা বলে অপপ্রচারের পর মল্লিকা ও তার পরিবারের লোকজনকে আমাদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে টাকা দিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করেন। কিন্তু আমরা তো টাকা দিয়ে দফারফা করতে চাই না। টাকা দিয়ে তো বোনকে ফিরে পাব না। আমরা বোন হত্যার বিচার চাই। সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিচার চাই।’

উল্লেখ্য গত শুক্রবার দুপুরে কলেজছাত্রী পূর্ণিমাকে অচেতন অবস্থায় রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় তার মৃত্যুর ঘটনা শুনে উধাও হয়ে যান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা। 

ঘটনার পরদিন শনিবার দুপুরে পূর্ণিমা চাকমার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ।

পূর্ণিমা জেলার জুরাছড়ি উপজেলার ৪নং দুর্গম দুমদুম্যা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বগাখালী এলাকার সাধন চাকমার মেয়ে। তিনি রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। পড়ালেখার সুবাধে জেলা শহরের রাজবাড়ী এলাকার মল্লিকার বাসায় থাকতেন। পূর্ণিমাকে মল্লিকার বাসায় রাখার ব্যবস্থা করেন দেন জুরাছড়ি উপজেলার বাসিন্দা অঞ্জলী চাকমা (গান্ধী)। 

এ ঘটনার পর থেকে মল্লিকা ও গান্ধীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে গতকাল সকালে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তুলে রাঙ্গামাটি শহরে বিক্ষোভ করেছে রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও পূর্ণিমার স্বজনেরা।