বাস ভাড়া ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে শাহবাগে অবস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২১, ১৬:৫১

শাহবাগ অবরোধ
জ্বালানি তেল ও বাস ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা শাহবাগ অবরোধ করেছেন বাম সংগঠনগুলো। শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয়ার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন এলাকায় জড়ো হন বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে আসেন।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে তারা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। এতে অংশ নেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন (গণসংহতি), বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদ), গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের শতাধিক নেতাকর্মী। তাদের অবস্থানের কারণে শাহবাগ মোড়কে ঘিরে থাকা সবগুলো সড়কে যানচলাচল প্রায় ৪০ মিনিট বন্ধ ছিলো। পরে পুলিশের অনুরোধে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে তারা অবস্থান কর্মসূচি শেষ করলে যানচলাচল সচল হয়।
শাহবাগে অবস্থানকালে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা গণমাধ্যমকে বলেন, দেশে আজ তেলের রাজনীতি চলছে। এ তেল দিয়ে সাধারণ জনগণ ছাড়া সবাই লাভবান হচ্ছে। এ তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব দেশের সবকিছুর ওপর পড়ছে। এটি কোনো সাধারণ বিষয় নয়, ভাড়া বৃদ্ধির চক্রান্ত সারাদেশের মানুষকে ভুক্তভোগী করছে। এ জ্বালানি তেল এবং বাস ভাড়া বৃদ্ধি চক্রান্তের বিরুদ্ধে কৃষক-শ্রমিক, ছাত্র-জনতা সবাইকে এক জায়গায় দাঁড়াতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসবে আমাদের আন্দোলন চলবে।
ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সভাপতি অনিক রায় বলেন, জনগণের ওপর দিয়ে ছড়ি ঘুরিয়ে এ সরকার টিকে আছে। জ্বালানি তেলসহ সবকিছুর দাম বাড়ায় জনগণের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। এর সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে বাস ভাড়াও। এভাবে আর চলতে পারে না। আসুন একসাথে এ সরকারের অবৈধ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়াই করি, এ লড়াইয়ে আমরাই বিজয়ী হব।
গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দিন বলেন, অস্বাভাবিকভাবে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি ও বাস ভাড়া বৃদ্ধি, তা সাধারণ মানুষের জন্য খুবই মর্মান্তিক। জ্বালানি তেলের দাম কমানো ও বাস ভাড়া কমানোর দাবিতে আমাদের এ অবস্থান কর্মসূচি। সারাদেশের মানুষ আমাদের সাথে আছে। দাম না কমলে আমরা লাগাতার কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন- পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি শুভাশীষ চাকমা, ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি (গণসংহতি) মিতু সরকার, গণতান্ত্রিক, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ইকবাল কবীর প্রমুখ।
গত ৩ নভেম্বর রাতে ডিজেলের দাম ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করে সরকার, যা ৪ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়। তখন পরিবহন মালিকরা বলেন, এত দামে ডিজেল কিনে বিদ্যমান ভাড়ায় গাড়ি চালানো সম্ভব নয়।
পরে মালিকরা শুক্রবার সকাল থেকে বাসসহ পণ্যবাহী যান চালানো বন্ধ করে দেন। যদিও মালিক সংগঠনগুলোর দাবি, ধর্মঘটের বিষয়ে তাদের কোনো নির্দেশনা ছিলো না। অঘোষিত ওই ধর্মঘটের ফলে সারাদেশে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বিআরটিএর কাছে ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয় বৃহস্পতিবার বিকেলে। কিন্তু বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে বিআরটিএ মালিক সমিতিকে বৈঠকের জন্য ডাকে রোববার।
রবিবার বিকেলে বৈঠক শেষে মালিকপক্ষের দাবি মেনে বাসের ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বিআরটিএ। এ বিষয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দূরপাল্লার বাস ভাড়া কিলোমিটারে ১ টাকা ৪২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১ টাকা ৮০ পয়সা করা হয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে বাস ভাড়া কিলোমিটারে ১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ২ টাকা ১৫ পয়সা করা হয়েছে। মিনিবাসের ক্ষেত্রে তা ১ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ২ টাকা ৫ পয়সা করা হয়েছে।