জামালপুরের সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের বুখুঞ্জা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং প্রিজাইডিং অফিসারকে লাঞ্ছিত করে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কেন্দ্রটি স্থগিত ঘোষণা করে প্রশাসন।

অপরদিকে তিতপল্লা ইউনিয়নের কানাইকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট প্রদানের ছবি তুলতে গিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থীর লোকদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন কয়েকজন সাংবাদিক। এ ঘটনায় সাংবাদিক নেতারা নিন্দা জানিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে একযোগে উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। মেষ্টা ইউনিয়নের বুখুঞ্জা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার পরপরই নৌকার প্রার্থী মো. বদরুল হাসান বিদ্যুৎ মহড়া দিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এসময় খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকায় সিল মেরে সব ভোট নিয়ে যাচ্ছে। এরপর স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাজমুল হক বাবুর লোকজন নৌকার প্রার্থী মো. বদরুল হাসান বিদ্যুৎ ও তার লোকদের ঘিরে ফেলে এবং বাঁশের লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করে। এসময় ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে নেয় কিছু লোক। বাধা দিলে ব্যালট বাক্স ছিনতাইকারীরা প্রিজাইডিং অফিসার আছাদুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে প্রিজাইডিং অফিসার ভোট স্থগিত করে পুলিশ পাহারায় চলে যান।

এব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটুস লরেন্স চিরান জানান, দিনের মধ্যবর্তী সময়ে কিছু দুর্বৃত্ত বুখুঞ্জা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রবেশ করে ৮টা বুথের ৪টা ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেয়। প্রিজাইডিং অফিসার বাধা দিলে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। এসময় চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে, পরবর্তীতে এই কেন্দ্রটি স্থগিত করা হয়।

অপরদিকে তিতপল্লা ইউনিয়নের কানাইকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুপুরের পর নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা জাল ভোট দেয়ার চেষ্টা করে। এসময় সাংবাদিকরা জাল ভোট দেয়ার ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আজিজুর রহমান আজিজের নেতৃত্বে তার সমর্থকরা সাংবাদিকের উপর হামলা করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা ও সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করে।

এ ঘটনায় নিউজ টুয়েন্টিফোরের সাংবাদিক তানভীর আজাদ মামুন, এনটিভির আসমাউল আসিফ, আজকের বিজনেস বাংলাদেশের খন্দকার রাজু আহমেদ, নিউজ টুয়েন্টিফোরের ক্যামেরাপার্সন শাকিল আহম্মেদ, মাই টিভির ক্যামেরাপার্সন শাওন মোল্লা, একুশে টিভির ক্যামেরাপার্সন সালাউদ্দিন আহমেদ মিঠু আহত হন।

এব্যাপারে জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী জানান, সাংবাদিকদের সাথে এমন ঘটনা ন্যাক্কারজনক, এমন ঘটনা কখনও কাম্য নয়। এমন ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।