ভাবীকে এসিড নিক্ষেপের মামলায় দেবরের কারাদণ্ড

জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২১, ১৫:৪৪

জামালপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত
জামালপুরে আনোয়ারা বেগম শিখা নামের এক নারীকে এসিড নিক্ষেপের দায়ে তাঁর দেবরকে ১০ বছর ও ননদকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
জামালপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র দায়রা জজ মো. জুলফিকার আলী খান রবিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত শাকিল আহম্মেদ বাবু (২৭) ও সাবিনা ইয়াসমিন শিলা (৩২) জামালপুর সদর উপজেলার বিনন্দেরপাড়া এলাকার মো. সামসুল হকের ছেলে-মেয়ে।
এরমধ্যে দেবর শাকিলকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ননদ সাবিনাকে ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে।
মামলা সূত্র জানায়, সদর উপজেলার বিনন্দেরপাড়া এলাকার মো. আলাল উদ্দিনের মেয়ে আনোয়ারা বেগম শিখাকে পারিবারিক কলহের জের ধরে তাঁর দেবর শাকিল আহম্মেদ বাবু ও ননদ সাবিনা ইয়াসমিন শিলা যোগসাজশে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। ২০১৪ সালের ১ অক্টোবর (বুধবার) রাতে নিজঘরে টিভি দেখার সময় দেবর শাকিল ও ননদ সাবিনা ভাবী আনোয়ারাকে এসিড নিক্ষেপ করে। এতে তাঁর শরীরের পেছন ভাগ ও দুই পায়ের হাঁটু পর্যন্ত দগ্ধ হয়। খবর পেয়ে জামালপুর ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। দীর্ঘদিন তিনি রাজধানীর এসিড সার্ভাইবাল ফাউন্ডেশনে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এ বিষয়ে আনোয়ারার বাবা আলাল উদ্দিন জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন, সাক্ষীদের স্বাক্ষ্যগ্রহণ ও দীর্ঘ শুনানি শেষে এসিড অপরাধ দমন আইন ২০০২ এর ৫(খ) ধারার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত দেবর ও ননদকে সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন জেলা দায়রা জজ আদালতের পি.পি অ্যাডভোকেট নির্ম্মল কান্তি ভদ্র এবং আসামিপক্ষের ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. ফজলুল হক।
আদালতের পি.পি অ্যাডভোকেট নির্ম্মল কান্তি ভদ্র রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ভাবীকে এসিড নিক্ষেপের দায়ে দেবরকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ননদকে ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
আসামিরা আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিনের প্রার্থনা করলে জামিন না-মঞ্জুর করে বিজ্ঞ আদালত তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করেন বলেও তিনি জানান।