
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার
‘মন চাইছে আত্মহত্যা করি। একটি চেকে আমি ডিসেম্বর বাংলায় লিখেছি বলে কাউন্টার থেকে চেকটি ফেরত দিয়েছে। কোন দেশে আছি?’
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এমন একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। আর তা নিয়ে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সকালে সাড়ে ১১টার দিকে এই স্ট্যাটাস দেন তিনি।
জানা গেছে, মন্ত্রী তার পরিচিত একজনকে একটি চেক দেন। তাতে ডিসেম্বর মাসের বানানটি বাংলায় লেখা ছিল। রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখায় জমা দিলে চেকটি প্রথমে ফেরত দেওয়া হয়। ওই পরিচিতজন বাসায় ফিরে মন্ত্রীকে বিষয়টি অবহিত করেন।
তারপর মন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে নিজে ব্যাংকের ওই শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন। পরে ব্যাংকের শাখা থেকে পুনরায় চেকটি অনার করা হয়। মন্ত্রীর হিসাব ব্যাংকটির মতিঝিলের প্রধান শাখায়। অতীতে চেক প্রধান শাখায় বাংলায় লিখে দিলেও কোনো সমস্যা হয়নি।
ওই স্ট্যাটাসের কমেন্টে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা অনেকেই আমার দুর্দশায় সংহতি প্রকাশ করেছেন। ধন্যবাদ। কেউ কেউ হা হা করেছেন—তাহারা “কাহার জন্ম নির্ণয় না জানি”। সুখবর হলো অবশেষে চাপে পড়ে চেকটির কোনও পরিবর্তন ছাড়াই টাকা দেওয়া হয়েছে ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছে। তারা জানিয়েছে আর কখনও এমন ভুল বা বাংলা হরফ নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি হবে না।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘ব্যাংকের নিয়মে বাংলা বিরোধিতার কিছু নেই। এটা ওই শাখার কিছু লোকের মানসিকতা। কেউ এমন অবস্থায় পড়লে অবশ্যই প্রতিবাদ করবেন। আমি পাশে আছি।’
পরবর্তীতে পোস্টটি সংশোধন করে তিনি লিখেন, “আজ সকালে একটি চেকে আমি ‘ডিসেম্বর’ বাংলায় লিখেছি বলে কাউন্টার থেকে চেকটি ফেরৎ দিয়েছিলো। এরপর সব ঠিক হয়েছে। এটা আমাদেরই বাংলাদেশ। প্রমাণিত হলো ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদ করলে জয়ী হওয়া যায়। সেই চেকের টাকা ভাঙানো হয়েছে। জয় বাংলা।”
এ নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে মন্ত্রী বলেন, ‘কোনো প্রতিষ্ঠানকে খাটো করতে এই স্ট্যাটাস দিইনি। ভাষার মর্যাদা রক্ষায় এটি করেছি। কারণ, বাংলাদেশই একমাত্র ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র। ভাষার জন্যই এই রাষ্ট্রের জন্ম। আগে প্রযুক্তিগত দিক থেকে বাংলা কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও এখন সেই অবস্থা নেই।’