Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

ওমিক্রন নয়, ডেল্টাতেই করোনা সংক্রমণ বাড়ছে

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২২, ১৩:২১

ওমিক্রন নয়, ডেল্টাতেই করোনা সংক্রমণ বাড়ছে

প্রতীকী ছবি

সম্প্রতি দেশে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ। এক সপ্তাহে রোগী বেড়েছে ৪৮ শতাংশ, মৃত্যুও বেড়েছে ৪২ শতাংশ। দৈনিক শনাক্তের হার ৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে ৩ মাস পর।

অপরদিকে অতি সংক্রমণযোগ্য ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আসার পর থেকে বিশ্ব এখন করোনার নতুন ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করছে। দেশেও ১০ জন ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। তাই আক্রান্তের সংখ্যা আবার বাড়তে শুরু করায় তা প্রশ্ন উঠেছে, ওমিক্রনের কি স্থানীয় সংক্রমণ ঘটছে?

তবে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক তাহমিনা শিরিন বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও ডেল্টা ধরনেই এখন করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। 

আজ মঙ্গলবার তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলাই বর্তমান সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ। সবার জন্য স্বাস্থ্যবিধি এক। এখন বিয়েশাদি হচ্ছে, কেউ মাস্ক পরছে না। নির্বাচন হচ্ছে, সেখানেও মাস্ক নেই।

করোনার ডেল্টা ধরনের দাপটে গত বছরের মাঝামাঝিতে দেশে করোনায় মৃত্যু, রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার বেড়েছিল। তবে আগস্টে দেশব্যাপী করোনার গণটিকা দেওয়ার পর সংক্রমণ কমতে থাকে। গত ডিসেম্বরের প্রথম কয়েক সপ্তাহ ধরে করোনা শনাক্ত ১ শতাংশের ঘরেই ছিল। কিছুদিন ধরে সংক্রমণে আবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে।

দেশে গত ডিসেম্বর মাসে প্রথম করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়। ধরনটি এখন নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে। করোনার বিস্তার রুখতে পশ্চিমবঙ্গসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে এরই মধ্যে আবার বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। করোনার ডেল্টা ধরনের বিপর্যয় পার করে আসা ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সম্প্রতি আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৮০ শতাংশের বেশি ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে।

তবে দেশের চলমান সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রবণতা ডেল্টার কারণে বলেই মনে করছেন তাহমিনা শিরিন। 

তিনি বলেন, নভেম্বর মাসে ১০০ ভাগ রোগী ডেল্টা ধরনে আক্রান্ত ছিলেন। এক মাসে তো তা উবে যাবে না। তাই আমরা বলতে পারি না যে ওমিক্রনের জন্যই সংক্রমণ একটু একটু করে বাড়ছে।

ডেল্টার চেয়ে ওমিক্রন দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে বলে উদ্বেগও বেশি। উদ্বেগ আরও বেড়েছে যখন জানা গেছে যে এটি টিকার সুরক্ষাও ভেদ করতে পারছে।

দেশে এখন রোগী বাড়ার সঙ্গে ওমিক্রনের সম্পর্ক রয়েছে কি না- এ বিষয়ে গতকাল সোমবার (৩ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ওমিক্রনের কারণে সংক্রমণ বাড়ছে, এমন বেশি কেস আমরা এখনও পাইনি। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যাদের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে, তারা সবাই বিদেশ থেকে এসেছেন বা বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তির সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হয়েছেন।

গত ৯ ডিসেম্বর জিম্বাবুয়ে ফেরত দুই নারী ক্রিকেটারের দেহে প্রথম ওমিক্রন ধরন শনাক্তের কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এরপর এ পর্যন্ত আরও আট রোগী শনাক্ত হয়েছে। ঢাকার বাসিন্দা এই ১০ জনের মধ্যে সাতজন নারী, তিনজন পুরুষ।

প্রতি মাসে করোনার জিন বিন্যাস বা জিনোম সিকোয়েন্সিং প্রতি মাসেই করে আইইডিসিআর। ডিসেম্বরের সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন না হলেও গত মাসে ওমিক্রনের কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা কম বলেই মনে করেন আইইডিসিআরের পরিচালক তাহমিনা শিরিন। তিনি বলেন, আলফা বা বিটাকে অতিক্রম করে ডেল্টা বিস্তার করেছিল। ডিসেম্বর মাসের কথা এখন বলতে পারব না। ডিসেম্বর মাসে সিকোয়েন্সিং এখনও হয়নি।

এদিকে ওমিক্রন মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে সোমবার সচিবালয়ে এক জরুরি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বসেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তবে এ নিয়ে বড় কোনও সিদ্ধান্ত আসেনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ওমিক্রনের বিষয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোও পরে জানানো হবে।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশে করোনায় মৃত্যু, নতুন রোগী ও পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার সবই বেড়েছে। ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬৭৪ জন। এ সময় করোনায় আক্রান্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫