Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

করোনাভাইরাস

সপ্তাহের ব্যবধানে মৃত্যু বেড়েছে ৮৮%, সংক্রমণ ১৮০%,

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:৫৯

সপ্তাহের ব্যবধানে মৃত্যু বেড়েছে ৮৮%, সংক্রমণ ১৮০%,

স্বাস্থ্যবিধি না মানায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। ছবি: স্টার মেইল

দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, গত এক সপ্তাহে (১৭ জানুয়ারি-২৩ জানুয়ারি) করোনা সংক্রমণ বেড়েছে ১৮০ শতাংশ, একইসঙ্গে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বেড়েছে ৮৮ শতাংশ। এদিকে, একদিনেই দেশে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৮২৮ জন, মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের।

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা বিষয়ক বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত এপিডেমিওলজিকাল প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

অধিদপ্তর বলছে, গত এক সপ্তাহে দেশে দুই লাখ ৫৫ হাজার ৪৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬৭ হাজার ৪২৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তবে পূর্ববর্তী সপ্তাহে (১০-১৬ জানুয়ারি) এক লাখ ৮৯ হাজার ৬৩০টি নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৪ হাজার ১১ জন। এতে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে সংক্রমণ বেড়েছে ১৮০ দশমিক ৮ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক সপ্তাহে দেশে করোনায় ৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা পূর্ববর্তী সপ্তাহে ছিল ৪২ জন। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশে মৃত্যু বেড়েছে ৮৮ দশমিক ১ শতাংশ।

মৃত ৭৯ জনের মধ্যে মাত্র ২৮ জন (৩৫.৪ শতাংশ) করোনার টিকা নিয়েছিলেন। এই ২৮ জনের মধ্যে ছয়জন প্রথম ডোজ এবং ২২ জন দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছিলেন। অবশিষ্ট ৫১ জনই (৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ) করোনার টিকার কোনো ডোজই গ্রহণ করেননি। 

এদিকে, দেশে গত একদিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৮২৮ জন। শনাক্তের হার ৩২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গতকাল রবিবার ১৪ জনের মৃত্যু এবং ১০ হাজার ৯০৬ জন রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অন্যদিকে, শনাক্তের হার ছিল ৩১ দশমিক ২৯ শতাংশ।

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনায় এ পর্যন্ত দেশে ২৮ হাজার ২৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৬ লাখ ৯৯ হাজার ৯৬৪ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয় ৪৫ হাজার ৯৯৯টি। ৪৫ হাজার ৮০৭টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৩২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

মৃতদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ, ৬ জন নারী। ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৬ জন। ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ জন ও সিলেট ২ জন মারা গেছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে মারা গেছেন একজন করে।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা সংস্থা, বাংলাদেশ বা আইসিডিডিআরবি সোমবার (২৪ জানুয়ারি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের তিনটি উপ-ধরন (সাব-ভ্যারিয়েন্ট) হয়েছে। এ উপ-ধরনগুলো রাজধানী ঢাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

আইসিডিডিআরবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জানুয়ারি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে ৩৭৯ জন কোভিড-১৯ রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে আইসিডিডিআরবি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তাদের মধ্যে ২৬০ জনই ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত। শতকরা হিসাবে যা ৬৯ শতাংশ।

গতকাল রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছিল, করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের জায়গা নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন একটু একটু করে দখল করে নিচ্ছে। গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, নতুন করে সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ শতাংশ ওমিক্রন আক্রান্ত।

গত বছরের ১১ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জিম্বাবুয়েফেরত দুই নারী ক্রিকেটার করোনার ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানিয়েছিল। এরও ৫ দিন আগে গত ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সর্বশেষ ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন শনাক্ত হয়। ওই সময় ৭৭ জন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে পাঁচজনের শরীরে নতুন এ ভ্যারিয়েন্ট পায় আইসিডিডিআরবি। বাকি ৭২ জনই ছিলেন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। তবে বছরের শুরুতেই বদলে যায় চিত্রপট। ধীরে ধীরে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে ওমিক্রন শনাক্তের হার বাড়তে শুরু করে।

প্রতিবেদনে আইসিডিডিআরবি জানিয়েছে, বাংলাদেশে গত বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত করোনার আলফা ভ্যারিয়েন্টের আধিপত্য ছিল। ওই বছরের মার্চে শনাক্ত হয় বেটা ভ্যারিয়েন্ট। মে মাসের মধ্যেই সেই ধরনটিতে আক্রান্তের সংখ্যা অন্য ধরনগুলোকে ছাড়িয়ে যায়। এরপর ২০২১ সালের মে মাস নাগাদ দেশে প্রথম ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। জুন মাস নাগাদ সংক্রমণের দিক থেকে এটি আগের সব ভ্যারিয়েন্টকে ছাড়িয়ে যায়।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেওয়ার পর সংক্রমিত হয়েছেন এমন অন্তত ২৪ জন রোগীসহ ২৯ জনে কথা বলেছে আইসিডিডিআরবি। যাদের মধ্যে পুরুষ ১৩ জন আর নারী ১৬ জন। এদের মধ্যে ২৪ জনই কোভিড-১৯ দ্বিতীয় ডোজের টিকা পেয়েছেন আর তিনজন পেয়েছেন প্রথম ডোজের টিকা। তাদের কারোর মধ্যে হালকা উপসর্গ, কারোর মধ্যে কোনো উপসর্গই দেখা যায়নি। এই ২৯ জনের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে মাত্র একজনকে। তাদের একজন মাত্র সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন। বাকি সবাই দেশেই ছিলেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫