দেশজুড়ে কদর রয়েছে নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় উৎপাদিত দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির ছোটমাছের শুঁটকির। শুধু দেশেই নয়, ভারতে রয়েছে এখানকার শুঁটকির কদর। তবে এ বছর মাছের অভাবে শুঁটকি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এ জন্য দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এ পেশার সঙ্গে জড়িত প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী। সবমিলিয়ে ভালো নেই আত্রাইয়ের শুঁটকিপল্লী।

উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদী। পাশাপাশি রয়েছে আরও শতাধিক জলাশয়। গত বছর বন্যা না হওয়ায় আগেই নদী ও খালবিলের পানি কমে গেছে। জলাশয়ে মিলছে না দেশি প্রজাতির মাছ। এজন্য শুঁটকি উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয় ও উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭০০ টন শুঁটকি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ৫৫০ টন উৎপাদন হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭০০ টন শুঁটকি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও, ৫৫০ টন অর্জিত হয়েছিল। এ ছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ৮০০ এর জায়গায় অর্জিত হয়েছিল ৬০১ টন। এ উপজেলায় ৪০ জন ব্যবসায়ী শুঁটকি উৎপাদন করেন বলে জানা গেছে।

আত্রাই রেলস্টেশন সংলগ্ন ভরতেঁতুলিয়া গ্রামটি মূলত শুঁটকির গ্রাম হিসেবে পরিচিত। এছাড়া আত্রাই আহসানগঞ্জ রেললাইনের দু’পাশে ও কেডিসি সংলগ্ন এলাকায় মাচাতে শুঁটকি মাছ শুকানো হতো; কিন্তু এ বছর মাছের অভাবে অনেক মাচা ফাঁকা পড়ে আছে।

শুঁটকি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের উত্তরের জেলা সৈয়দপুর, রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, জামালপুর ও ঢাকায় সরবরাহ হয় নওগাঁর শুঁটকি। তবে প্রধান বাজার ভারতের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য। এই শুঁটকি প্রথমে সৈয়দপুর যায়। এরপর সেখান থেকে ট্রেনযোগে রফতানি করা হয় ভারতে। তবে গতবছর বন্যা না হওয়ায় এবং খাল-বিলের পানি শুকিয়ে আসায় দেশীয় মাছে উৎপাদন কমে গেছে। এতে শুঁটকি উৎপাদন নিয়ে হতাশায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

গত আট বছর থেকে শুঁটকি ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ভরতেঁতুলিয়া গ্রামের এরশাদ আলী বলেন, এবার বন্যা না হওয়ায় মাছের আমদানি কম। উৎপাদনও কম হচ্ছে। গতবছর প্রায় দুই হাজার মণ শুঁটকি বিক্রি করেছি। লাভও ভালো হয়েছিল। দেশি মাছের আমদানি কম থাকায় শুঁটকির উৎপাদন কম হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ বছর অর্ধেকেরও কম শুঁটকি উৎপাদন হতে পারে।