সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। রায়ে কী হচ্ছে তা দেখার অপেক্ষায় কক্সবাজারসহ সারা দেশের মানুষ।
বিশেষ করে সাবেক ওসি প্রদীপের কর্মস্থল টেকনাফের মানুষ অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে রায় শুনার জন্য। এমনটাই জানা গেছে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে।
টেকনাফ থেকে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছেন,৩১ জানুয়ারি সোমবার ওসি প্রদীপের ফাঁসির দাবি জানিয়ে সারিবদ্ধভাবে গাড়ি বহর নিয়ে টেকনাফে প্রদীপ বাহিনীর হাতে নিহত ব্যক্তিদের স্বজনরা কক্সবাজারে আসার আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাছাড়া বিচ্ছিন্ন ভাবেই কয়েক হাজার মানুষ ওই দিন আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করবে।
প্রদীপের গুলিতে নিহত দুই শতাধিক ব্যক্তির স্বজনহারা মানুষ ইতোমধ্যে একাধিক গাড়িও রিজার্ভ করেছেন। সীমান্ত এলাকায় একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর (অব) সিনহা হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ টেকনাফে দায়িত্ব পালনকালীন টাকার লোভে ২০৪ জন ব্যক্তিকে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করেছেন। প্রদীপসহ তার ব্যক্তিগত বাহিনীর সদস্যরা ধর্ষণ করেছে বহু নারীকে। থানা কম্পাউন্ডে এবং প্রদীপের জলসাঘরে আটকে রেখে ইজ্জত লুটে নিয়েছে অসংখ্য অবলা নারীর। ইয়াবার তকমা লাগিয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের থানায় ধরে এনে আদায় করেছে লাখ লাখ টাকা। টাকা নেয়ার পরও বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা করা হয়েছে ২০৪ ব্যক্তিকে।
আগামীকাল ৩১ জানুয়ারি (সোমবার) মেজর সিনহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করবেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোম্মদ ইসমাইল। ওই দিন ভোর থেকে কক্সবাজারের আদালত প্রাঙ্গণে নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তা ও লোকজনের চলাচলের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করবে স্থানীয় প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করবে সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা সদস্যরা।
জেলা পর্যায়ের একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম চলাকালীন কক্সবাজার জেলা পুলিশ কড়াকড়িভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। কারাগার থেকে সাবেক ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতসহ ১৫ আসামিকে কড়া পাহারায় আদালতে হাজির এবং ফের কারাগারে পৌঁছেছে। ৩১ জানুয়ারি ওই মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে। এটি মাথায় রেখে সাধারণ মানুষের ভিড় সামলাতে আমরা পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। আদালত প্রাঙ্গণে ও আশপাশে যাতে কোনো ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়, পুলিশ সেভাবে দায়িত্ব পালন করবে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তা কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি সিনিয়র আইনজীবী ফরিদুল আলম বলেন, গত বছরের ২৩ আগস্ট থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জেরা শেষ হয়। আদালতে ৬৫ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। গত ১২ জানুয়ারি দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালতের বিচারক আগামী ৩১ জানুয়ারি আলোচিত এ মামলার রায়ের দিন নির্ধারণ করেছেন। আমরা আশা করছি রায়ে বাদী পক্ষ ন্যায় বিচার পাবে, আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে।