গতকাল বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ছিলো শহীদ কমরেড সিরাজ সিকদারের ৪৫তম শহীদ দিবস। সকল শহীদ ও প্রয়াত বিপ্লবী ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতাকর্মিদের স্মরণে প্রতি বছরের মতো এবারো দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘জাতীয় শহীদ দিবস’ হিসেবে পালন করেছে শহীদ বিপ্লবী ও দেশপ্রেমিক স্মৃতি সংসদ।
‘জাতীয় শহীদ দিবসে’ দুই দিনব্যাপি কর্মসূচি গ্রহণ করে শহীদ বিপ্লবী ও দেশপ্রেমিক স্মৃতি সংসদ। প্রথম দিনে ২ জানুয়ারি সকালে শহীদ বিপ্লবী ও দেশপ্রেমিক স্মৃতি সংসদের সভাপতি কমরেড হাসান ফকরীর নেতৃত্বে ঢাকার শ্যামলী সিনেমা হলের সামনে সমবেত হয়ে মোহাম্মদপুর গোরস্থান পর্যন্ত এক স্লোগানমুখর প্রভাত ফেরি শেষে শহীদ কমরেড সিরাজ সিকদারের সমাধিস্থলে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় তোপখানা রোডস্থ শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠন এবং প্রগতিশীল ব্যক্তিরা সমবেত হন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন শহীদ বিপ্লবী ও দেশপ্রেমিক স্মৃতি সংসদের সভাপতি কমরেড হাসান ফকরী। সঞ্চালনা করেন বিপ্লবী শ্রমিক আন্দোলনের আহ্বায়ক বিপ্লব ভট্টাচার্য।
আলোচনা সভায় উপস্থিত সবাই দাঁড়িয়ে শহীদ ও প্রয়াত বিপ্লবীদের প্রতি এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- প্রগতিশীল লেখক ও মঙ্গলধ্বনি পত্রিকার সম্পাদক শাহেরীন আরাফাত, বিপ্লবী শ্রমিক আন্দোলনের সহ আহ্বায়ক লাবণী মণ্ডল, খনন পত্রিকার সম্পাদক বাদল শাহ আলম, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের (এনডিএফ) সাধারণ সম্পাদক ব্রিগেডিয়ার (অব.) জাহাঙ্গীর হোসাইন, জ্বালানি গবেষক বি ডি রহমতউল্লাহ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ডা. ফয়জুল হাকিম, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের সভাপতি মাসুদ খান এবং নয়াগণতান্ত্রিক গণমোর্চার সভাপতি জাফর হোসেন। অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন আসমা বেগম, নাসিমা নাজনীন ও রইস মুকুল।
বক্তারা কমরেড সিরাজ সিকদার, কমরেড আসাদ, কমরেড মনিরুজ্জামান তারা, কমরেড এরাদ আলী, কমরেড মোফাখখার চৌধুরী, কমরেড মিজানুর রহমান টুটুসহ পাকিস্তান আমল থেকে এখন পর্যন্ত সকল শহীদদের শ্রদ্ধা জানান।
সেই সঙ্গে আজীবন বিপ্লবী ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অবদান রেখে প্রয়াত হওয়া কমরেড ননী গোপাল দত্ত, কমরেড শিবলী কাইয়ূম, কমরেড নাজমুল, কমরেড সুলতান হাফিজ, কমরেড নিজাম উদ্দিন মতিনসহ অন্যান্যদের শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা সব সরকারের আমলেই যেভাবে বিপ্লবী ও গণতান্ত্রিক নেতাকর্মিদের বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ড চলেছে তার সমালোচনা তুলে ধরেন। একইসঙ্গে দেশে বিদ্যমান অর্থনৈতিক বৈষম্য, রাজনৈতিক স্বাধীনতা নিয়েও বক্তারা প্রশ্ন তোলেন। দেশের রাজনীতি-অর্থনীতিতে ভারতের প্রভাব নিয়েও তারা সমালোচনা করেন।