বিছানার চাদর কিনতে জার্মানি যাচ্ছেন আইজিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:৩২

ড. বেনজীর আহমেদ। ফাইল ছবি
পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের জন্য বালিশের ডাবল কাভারসহ এক লাখ বিছানার চাদর আনা হচ্ছে জার্মানি থেকে। স্থানীয় ঠিকাদারের সরবরাহ করতে যাওয়া এসব পণ্যের মান পরীক্ষা করতে জার্মানি যাওয়ার অনুমতি নিয়েছেন পুলিশ প্রধান ড. বেনজীর আহমেদ।
জার্মানির যে প্রতিষ্ঠান থেকে এসব আনা হবে তার গ্রহণযোগ্যতা ও মান যাচাই করতে আইজিপির জার্মানি যাওয়ার কথা রয়েছে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেই।
তার সঙ্গে আরও যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপ-সচিব মো. ফিরোজ উদ্দিন খালিফা এবং পুলিশ সদর দপ্তরের এসপি ও আইজিপির স্টাফ অফিসার মোহাম্মদ মাসুদ আলম।
ওই চাদর ও বালিশের কাভার শিপমেন্টের আগেই তারা মান পরীক্ষা করবেন।
অবশ্য এই ধরনের পণ্য বাংলাদেশেই তৈরি হয় এবং এখন যুক্তরাষ্ট্রে, অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। জার্মানিতেও এসব পণ্যের বড় বাজার আছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপ-সচিব মাহবুবুল আলম মজুমদারের সই করা চিঠিতে এই তথ্য জানা গেছে।
টেলিফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের যাওয়ার জন্য আমি আদিষ্ট হয়ে চিঠি দিয়েছি। সিদ্ধান্ত হয়েছে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে। তারা ভিসা পেয়েছেন কী না, যাবেন কী না, সেই তথ্য আমার কাছে নাই।’
গত সোমবার ওই তিন কর্মকর্তার সফর সংক্রান্ত সরকারি আদেশ জারি হয়েছে। জননিরাপত্তা বিভাগের উপ-সচিব স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, বালিশের কাভারসহ ডাবল সাইজের এক লাখ পিস বিছানার চাদরের শিপমেন্ট নিশ্চিত করতে এই তিন কর্মকর্তা ৯ দিনের জন্য জার্মানি যাচ্ছেন। পাশাপাশি তারা ফ্যাক্টরি একসেপ্টেন্স টেস্টেও (এফএটি) অংশ নেবেন। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে যেকোনও সময় তারা এই সফর সম্পন্ন করবেন। সফরের খরচ আয়োজক সংস্থা বহন করবে। সফরে বাংলাদেশ সরকারের কোনও আর্থিক সংশ্লিষ্টতা নেই।
জার্মানিতে মোট নয় দিন অবস্থান করার কথা রয়েছে তাদের৷ ফেব্রুয়ারি মসের মধ্যেই সুবিধাজনক সময়ে তারা যাবেন।
পরররাষ্ট্র সচিবকে নোট ভারবাল (এক দেশকে আরেক দেশের আনুষ্ঠানিক পত্র) ইস্যু করার জন্য চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে। এছাড়া সরকারের আরও সাত প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয়া হয়েছে অবগতি ও সহায়তার জন্য। চিঠিতে বলা হয়েছে, পুলিশের প্রধানসহ তিনজনের জার্মানি সফরের খরচ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বহন করবে।
জানা গেছে, গত ৮ অক্টোবর এই বিছানার চাদর ও বালিশের ডাবল কাভার সরবরাহের জন্য পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দরপত্র আহ্বান করে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। কম্বল, অ্যাপুলেট, হ্যান্ড গ্লোভস, ডাবল পিলো কাভারসহ বেডশিট, সিঙ্গেল পিলো কাভারসহ বেডশিট, বডি ব্যাগ, কটন ভেস্টসহ ২১ ধরনের আইটেম সরবরাহের জন্য এই দরপত্র আহ্বান করা হয়। তার মধ্যে বালিশের ডাবল কাভারসহ বিছানার চাদর একটি আইটেম।
সরকারে ই-প্রকিউর ওয়েবসাইটেও দরপত্রটি প্রকাশ করা হয়েছে ৭ অক্টোবর। তাতে এই দরপত্র আহ্বান ও মালামাল গ্রহণের জন্য পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আতাউল কিবরিয়ার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আর ২৮ এপ্রিলের মধ্যে বালিশের ডাবল কাভারসহ বিছানার চাদর সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।
জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি কামরুজ্জামান বলেন, যখনই কোনও ফেব্রিক্স কেনা হয় তখনই টেন্ডারে প্যাসিফিকেশন দেওয়া হয়। রংয়ের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রং ঠিক আছে কিনা সেটা গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হয়।
তিনি বলেন, এবার যেসব বেডশিট ও বালিশের কাভার কেনা হবে সেগুলো হবে ইউরোপিয়ান রংয়ের। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পুলিশে যে ধরণের বেডশিট ও বালিশের কাভারে কালার ব্যবহার করে আমাদের দেশের পুলিশও সে ধরণের কালার ব্যবহার করবে। এবারের কালার হবে জার্মানির।
এক প্রশ্নের জবাবে এআইজি বলেন, যেসব বেডশিট ও বালিশের কাভার কেনা হচ্ছে সেগুলোর দাম ৩০ কোটি টাকা। অতীতে এর চেয়ে কম দামের জিনিস কিনতেও আইজিপির নেতৃত্বে পুলিশের টিম বিদেশ সফর করেছে। তখন তেমন অলোচনা হয়নি। তাই এবারের সফর নিয়ে এত আলোচনার কিছু নেই।