Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

৮২ শতাংশই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত : বিএসএমএমইউ

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৫:২৩

৮২ শতাংশই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত : বিএসএমএমইউ

প্রতীকী ছবি

দেশে গত তিন সপ্তাহে মাসে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৮২ শতাংশের শরীরে ওমিক্রন ধরন শনাক্ত হয়েছে। বাকি ১৮ শতাংশের শরীরে পাওয়া গেছে ডেল্টা ধরন। 

গত তিন সপ্তাহের তথ্য বিশ্লেষণ করে আজ বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এ তথ্য জানায়।

জিনোম সিকোয়েন্সিং রিসার্চ প্রজেক্টের প্রধান পৃষ্ঠপোষক (সুপারভাইজার) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ জানান, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ভর্তি রোগী ও বর্হিবিভাগের রোগীর মধ্যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ৮২ শতাংশ এবং ১৮ শতাংশ ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট পেয়েছি। এসময়ে ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএ.১, বিএ.১.১, বিএ.২ পরিলক্ষিত হয়েছে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিএ.২ বেশি সংক্রামক।

এদিন কোভিড-১৯ এর ৯৩৭টি জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার ফলাফল প্রকাশ বিএসএমএমইউ। তাতে দেখা যায়, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের ৮৮ শতাংশই বর্তমানে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত।

ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, গত বছরের ২৯ জুন থেকে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশব্যাপী কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়েছে। গবেষণায় বাংলাদেশের সব বিভাগের রিপ্রেজেন্টেটিভ স্যাম্পলিং করা হয়। মোট ৯৩৭টি কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর ন্যাজোফ্যারিনজিয়াল সোয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয় এবং জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের সঙ্গে রোগীর তথ্য-উপাত্তের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হয়। 

তিনি বলেন, বিএসএমএমইউ-এর গবেষণায় ৯ মাস থেকে শুরু করে ৯০ বছরের বয়স পর্যন্ত রোগী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এর মধ্যে বর্তমানে ৩০ থেকে ৫৯ বছর বয়সী রোগীদের সংখ্যা বেশি। শিশুদের মধ্যেও কোভিড সংক্রমণ পাওয়া গেছে। পুরুষ ও নারীদের আক্রান্তের হার প্রায় সমসংখ্যক। ৪৯ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ শতাংশ নারী আক্রান্ত হয়েছেন। 

তিনি আরও বলেন, কোভিড আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যাদের কো-মরবিডিটি রয়েছে, যেমন ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস তাদের রোগের প্রকটতা বেশি।

ডা. শারফুদ্দিন বলেন, গত বছরের জুলাই মাসে দেখা যায়, মোট সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশ ছিল ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। ১ শতাংশ হয়েছিল সাউথ আফ্রিকান বা বেটা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ, ১ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে আমরা পেয়েছি মরিসাস ভ্যারিয়েন্ট বা নাইজেরিয়ান ভ্যারিয়েন্ট। 

তিনি বলেন, গত বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৯৯ দশমিক ৩১ শতাংশ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট, একটি করে ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন—আলফা বা ইউকে ভ্যারিয়েন্ট এবং বেটা বা সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট এবং অন্য একটি স্যাম্পল শনাক্ত হয় ২০বি ভ্যারিয়েন্ট, যা সার্স-কোভ-২ এর একটি ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট। 

তিনি আরও বলেন, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সংগৃহীত স্যাম্পলের ২০ শতাংশ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছিল। এসময় ওমিক্রনের মাত্রা একটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএ.১ পেয়েছিলাম এবং ৮০ শতাংশ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়। সেসময় আমরা পরবর্তী মাসে এই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট গুণিতক হারে বৃদ্ধির আশঙ্কা করেছিলাম। চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ভর্তি রোগী ও বর্হিবিভাগের রোগীর মধ্যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ৮২ শতাংশ এবং ১৮ শতাংশ ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট পেয়েছি। 

বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে ওমিক্রন অনেক বেশি সংক্রামক। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট জিনোমের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি মিউটেশন পাওয়া গেছে, যার বেশিরভাগ ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিনে হয়েছে। এই স্পাইক প্রোটিনের ওপর ভিত্তি করে বেশিরভাগ ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়ে থাকে। স্পাইক প্রোটিনের গঠনগত বদলের জন্যই প্রচলিত ভ্যাকসিনেশনের পরেও ওমিক্রন সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকে যায়।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫