
সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে শতশত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ
বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার সীমানা সংলগ্ন ২১টি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দার চলাচলের একমাত্র ভরসা একটিমাত্র বাঁশের তৈরি সাঁকো। তাও আবার নড়বড়ে। বহু বছর আগে এই স্থানে খেয়া পারাপারের ব্যবস্থা থাকলেও ২৫ বছর আগে সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। তাই প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই এই সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে আড়পাঙ্গাশিয়া ও পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের ২১টি গ্রামের শতশত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। সড়ক নির্মাণে নেই কারও উদ্যোগ।
আমতলীর আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের চরকগাছিয়া এবং তালতলীর পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নে কলারং গ্রামের সীমানা ঘেঁষে বয়ে খালের ওপর নির্মিত হয় এই সাঁকোটি। চরকগাছিয়া, পচাকোড়ালিয়া, কলারং, আড়পাঙ্গাশিয়া, ঘোপখালী, চান্দখালীসহ আশপাশের ২১টি গ্রামের মানুষের উপজেলা সদর এবং অন্যান্য ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সাঁকোটি। দৈনন্দিন প্রয়োজন, কর্মসংস্থান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য সাঁকো দিয়েই যাতায়াত করতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। সরেজমিনে দেখা যায়, গ্রামের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পেরিয়ে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় যাতায়াত করছে।
স্থানীয়রা জানান, এই বাঁশের তৈরি সাঁকো পারাপারে যেমন রয়েছে ঝুঁকি, তেমনি প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রতি দিলেও পরে এ বিষয়ে তারা কোনো পদক্ষেপ নেন না।
কলারং গ্রামের কৃষক আখতার হোসেন বলেন, আমার জমি খালের ওপার। চাষাবাদের জন্য রোজ সাঁকো পার হয়ে জমিতে আসা যাওয়া ও ফসল আনা নেওয়া করতে হয়। গত শীতে খড়ের আঁটি নিয়ে সাঁকো পারাপারের সময় দুই বাঁশের ফাকে পা আটকে গিয়েছিল আমার।
চরকগাছিয়া গ্রামের খলিল মৃধা বলেন, ছোটবেলা থেকেই এখানে সাঁকো দেখে আসছি। গ্রামবাসী খুব কষ্টে এ সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করেন। বেশি কষ্ট হয় অসুস্থ, বয়ষ্ক ও গর্ভবতীদেরও জন্য। এখানে সেতু নির্মাণ করা হলে আশপাশের কয়েক গ্রামের লোকজন উপকৃত হবেন।
তালতলীর উপজেলার পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাফর মিয়া বলেন, সাঁকোটি আমি পরিদর্শন করেছি। তালতলী ও আমতলীর বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এই সাঁকোর ওপর নির্ভরশীল। আমি ওপাড়ের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে যৌথভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সুপারিশ পাঠাবো। যাতে দ্রুত এটি নির্মাণ করা যায়।
আমতলী উপজেলার আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেলী পারভীন বলেন, আমার স্বামী চেয়ারম্যান থাকাকালীন এই স্থানে সেতু নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিলেন। সেটা এখন কী অবস্থায় আছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখব।