অবশেষে সরানো হলো সেই হাতি, ক্ষতিপূরণ দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২২, ১৬:০৭

পুনাক শিল্পপণ্য মেলায় আনা সার্কাসের ‘দি লায়ন’ হাতি। ছবি : লালমনিরহাট প্রতিনিধি
লালমনিরহাটে শিল্পমেলায় আনা সেই হাতিটি ট্রাকে করে সিরাজগঞ্জে পাঠিয়েছেন দি লাইনস সার্কাসের মালিক।
গতকাল বুধবার (২মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাট বঙ্গবন্ধু কলোনি মাঠ থেকে ট্রাকে তোলা হয় ওই হাতিটিকে। এদিকে হাতির তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে।
এর আগে গত সোমবার বেলা ১১টার দিকে পায়ের শিকল ছিঁড়ে বেরিয়ে এসে শহরের সাহেবপাড়ায় তাণ্ডব শুরু করে হাতিটি। প্রায় ২৬ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার (১ মার্চ) দুপুরে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. তপন কুমার দে’র নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম এসে ট্র্যাঙ্কুলাইজার যন্ত্রের মাধ্যমে হাতিটিকে অচেতন করে।
স্থানীয়রা জানান, লালমনিরহাট পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) আয়োজিত শিল্প মেলায় আনা হাতিটি হঠাৎ পায়ের শিকল ছিঁড়ে বেরিয়ে পড়ে শহরে। এসময় বেশ কয়েকটি দোকানপাটে ভাঙচুর চালায়। পরে মাহুতসহ সার্কাস দলের সদস্যরা একে শান্ত করতে গেলে আরও উত্তেজিত হয়ে রাস্তার গাছপালাসহ মানুষের ওপর আক্রমণ করে।
এসময় বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে সার্কাস দলের সদস্যরা ব্যর্থ হয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে শহরের সাহেবপাড়ায় তাণ্ডব শুরু করে একটি বিলে নেমে পড়ে হাতিটি। ওই পুকুর থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলেও হাতিটিকে উদ্ধার করতে পারেননি বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
পরে ঢাকায় খবর দিলে ড. তপনের নেতৃত্বে একটি টিম লালমনিরহাটে আসেন। এরপর একটি বাঁশবাগানে নিয়ে হাতিটিকে ট্র্যাঙ্কুলাইজার যন্ত্রের মাধ্যমে অচেতন করা হয়।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে পুনাক আয়োজিত শিল্পমেলা নিয়ে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। পরে আয়োজকরা অনেকটাই বেকায়দায় পড়ে যান। অবশেষে মেলার আয়োজকরা হাতির মালিককে হাতি সরিয়ে নিতে বলেন। পরে হাতিটিকে সিরাজগঞ্জ পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে পুনাক শিল্পমেলার পরিচালক সাগর খান বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর হাতিটি উদ্ধার করা গেছে। চিকিৎসকদের পরামর্শে হাতিটি এখান থেকে সরানো হয়েছে।
মেলা বন্ধ হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেলা বন্ধ হওয়ার বিষয়ে এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে মেলা পরিচালনা করতে গিয়ে আয়োজকরা লোকসানের মুখে আছেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা মাসুম জানান, বর্তমানে হাতিটি সুস্থ রয়েছে। তার শরীরে বেশ কয়েকটি ইনজেকশন দেওয়া আছে। এসব ইনজেকশনের মেয়াদ প্রায় সপ্তাহখানেক চলবে। যদি আবারও জেগে তাণ্ডব চালায়, সে কারণে তাকে জেলার বাইরে পাঠানো হয়েছে।