
ছবি: সংগৃহীত
লবণ শিল্পের জন্য এক সময় বিখ্যাত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা ঝালকাঠি হারাতে বসেছে তার ঐতিহ্য। একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্থানীয় লবণ কারখানাগুলো। অভিযোগ যে, চীন, ভারত ও মিয়ানমার থেকে ক্ষতিকারক সোডিয়াম সালফেড লবণ এনে প্যাকেটজাত করে বাজারে বিক্রি করায় এখানকার লবণ শিল্পে ধস নেমেছে। বিপাকে পড়েছেন এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা। লোকসানে পড়ে ইতিমধ্যে ২০টি কারখানার ১১টিই বন্ধ হয়ে গেছে। কোনো রকমের টিকে থাকা ৮টি কারখানায়ও কমে গেছে উৎপাদন।
শিল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, কক্সবাজার থেকে কাঁচামাল এনে প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি করা হতো এখানকার ২০টি কারখানায়। লবণ প্যাকেটজাত করে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হতো। একসময় এই লবণ শিল্পের জন্য বন্দরের মর্যাদা পেয়েছিল এই জেলা; কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এখানকার লবণ কারখানাগুলো।
শ্রমিকরা জানান, বর্তমানে সপ্তাহে ২ থেকে ৪ দিন চালু থাকে লবণ কারখানাগুলো।
পশ্চিম ঝালকাঠি এলাকার বাসিন্দা ও এআরএস সল্টের শ্রমিক মোস্তফা সরদার (৪৫) বলেন, বর্তমান বাজারে সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। মিলে এখন আর কাজ ঠিকমতো হয় না। সপ্তাহে দুই-তিন দিন কাজ হয়। এতে আমাদের মজুরি কমে গেছে। এ অবস্থায় সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সরকার বিদেশ থেকে লবণ আনে, তাই দেশি লবণের চাহিদা কমে যাচ্ছে।
মালিক ও স্থানীয় লবণ মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল শরীফ বলেন, লবণ মিল মালিকরা বর্তমানে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত। কারণ ইন্ডাস্ট্রি লবণ আমদানির ঘোষণা দিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চীন, ভারত ও মিয়ানমার থেকে ক্ষতিকারক সোডিয়াম সালফেড এনে খাদ্য লবণ হিসেবে প্যাকেটজাত করে বাজারে বিক্রি করছে।
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে কারখানাগুলোতে লবণ উৎপাদন বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে বিসিকের মাধ্যমে লবণ মালিকদের সহযোগিতা করা হবে।