Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

বিসিসির ৫০ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া

Icon

বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২২, ১৮:৫১

বিসিসির ৫০ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া

ফাইল ছবি

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) কাছে বিদ্যুৎ বিভাগের পাওনা প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা। মাসের পর মাস বকেয়ার পরিমাণ পাহাড় সমান হলেও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের কোনো উদ্যোগ নেই বিসিসির। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য রসিটি কর্পোরেশনকে দফায় দফায় নোটিশ পাঠিয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

সর্বশেষ গত ৩ মার্চ বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষকে একটি নোটিশ দিয়েছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)।

আজ মঙ্গলবার (৮ মার্চ) সিটি কর্পোরেশনের বিদ্যুৎ বিভাগে ওই নোটিশ পৌঁছেছে।

এদিকে, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান আমলের নয় বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহমেদ।

বিসিসির বর্তমান বিদ্যুৎ বিল নিয়মিত পরিশোধ করা হয় বলে জানান এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, আগের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের বিষয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয়ে আলোচনা চলছে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পানির পাম্প, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট, সড়ক বাতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নাগরিক সুবিধা প্রদানের জন্য ওজোপাডিকোর বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু নিয়মিতভাবে সিটি কর্পোরেশনের ব্যবহৃত বিদ্যুতের বিল জমা হচ্ছে না। বিশেষ করে তৎকালীন মেয়র মরহুম শওকত হোসেন হিরণের সময় থেকে বিদ্যুৎ বিলের পাহাড় জমতে শুরু করে।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, তৎকালীন মেয়র শওকত হোসেন হিরণ দায়িত্বে থাকাকালীন পাঁচ বছরে এক টাকার বিদ্যুৎ বিলও পরিশোধ করা হয়নি। এ কারণে বকেয়া বিলের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। পরবর্তীতে বিএনপির মেয়র আহসান হাবিব কামালের নেতৃত্বাধীন পরিষদ থাকাবস্থায় বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২২ কোটি।

সূত্র আরো জানায়, সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামাল এর সময়ে কয়েক কিস্তিতে বিদ্যুৎ বিলের কিছুটা বকেয়া পরিশোধ করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে বকেয়া বিল পরিশোধ করা আবার বন্ধ হয়ে যায়। যে কারণে বর্তমান মেয়রের সময়ে সেই বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৬ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ১৯৮ টাকায়। বিশাল অঙ্কের এই বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য সিটি কর্পোরেশনকে দফায় দফায় নোটিশ করা সত্ত্বেও পরিশোধের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না বলে দাবি বিদ্যুৎ বিভাগের।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বরিশাল বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্র-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমজাদ হোসেন বলেন, মূলত ২০০৭ সাল থেকেই বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বিদ্যুৎ বিলের বকেয়া জমতে থাকে। তবে এর আগেও কিছু বকেয়া ছিল। সেটা বেশি নয়। বর্তমানে আমাদের দুটি জোনে বকেয়া বিদ্যুতের পরিমাণ প্রায় ৪৭ কোটিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ বিক্রয় এবং বিতরণ কেন্দ্র-১ এ প্রতিমাসে বিল আসে প্রায় ২৫ লাখ টাকা। এছাড়া বিক্রয় এবং বিতরণ কেন্দ্র-২ এ বিল আসছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি মাসে দুটি জোনে বিসিসির ব্যবহৃত বিল আসছে ৪৫ লাখ টাকা। কিন্তু কোনো মাসেই বিল পরিশোধ করা হচ্ছে না। এজন্য আমরা দফায় দফায় নোটিশ করেও বকেয়া বিল আদায় করতে পারছি না। সর্বশেষ গত ৩ মার্চ নোটিশ করা হয়েছে।

এই কর্মকর্তা বলেন, সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের সময়ে কয়েক কিস্তিতে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয়েছিল। কিন্তু সেটা বেশি একটা নয়। তবে বর্তমান সময়ে এক টাকার বকেয়াও পরিশোধ করেনি বিসিসি। বিষয়টি আমরা মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি। এখন আমাদের মন্ত্রণালয় (বিদ্যুৎ) থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।

এদিকে, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহমেদ বলেন, বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের বিষয়টি নিয়ে ইতোপূর্বে বহুবার আলোচনা হয়েছে। কিভাবে এই সমস্যা সমাধান করা যায় এ বিষয়টি বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসনের সভায় উত্থাপন করা হয়েছে।

এই কর্মকর্তা আরো বলেন, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল নিয়ে কথা হচ্ছে সেটা অনেক পুরানো বিল। পৌরসভার আমলে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া বাজতে শুরু করে। তবে বর্তমানে প্রতি মাসের বিল মাসেই পরিশোধ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে আমরা ট্যাক্স পাবো আর বিদ্যুৎ বিভাগ আমাদের কাছে বিদ্যুৎ বিল পাবে। প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল এবং ট্যাক্সের টাকা হিসাব করে উভয় পক্ষের বিল পরিশোধ করা হচ্ছে। তবে বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে এখন আন্ত:মন্ত্রণালয় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫