টাঙ্গাইলের গোপালপুরে বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালীন সময় প্রধান শিক্ষকসহ তিন শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় দুই বখাটেকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। 

গতকাল সোমবার উপজেলার নগদা শিমলা ইউনিয়নের মেহেরুনেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটে। 

আজ মঙ্গলবার (৮ মার্চ) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোপালপুর থানার ওসি মোশারফ হোসেন।

গ্রেফতারকৃত বখাটেরা হলেন- উপজেলার জামতৈল গ্রামের মো. আব্দুল মজিদের ছেলে হৃদয় (১৯) ও মো. মিজানুর রহমানের ছেলে রাব্বি (২০)।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার (৭ মার্চ) দুপুরে হৃদয় ও রাব্বী বহিরাগতদের নিয়ে ক্লাস চলাকালীন সময় বিদ্যালয়ের মাঠে ঝগড়া শুরু করে। এ সময় সহকারী শিক্ষক সোলায়মান ও শাহনাজ পারভীন তাদের ঝগড়া করতে নিষেধ ও বিদ্যালয় ত্যাগ করতে বলেন। এতে বখাটেরা ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষকদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় প্রধান শিক্ষক বাধা দিলে বখাটেরা তাকেও লাঞ্ছিত করে ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। বখাটেদের হামলায় প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল বারী, সহকারী শিক্ষক সোলায়মান আহত ও লাঞ্ছিত হন সহকারী শিক্ষক শাহনাজ পারভীন। পরে শিক্ষক ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। রাতে প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল বারী বাদী হয়ে ওই দুই বখাটের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।

এলাকাবাসী ন্যক্কারজনক ওই হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবির পাশাপাশি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।

মেহেরুনেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল বারী বলেন, করোনা কালীন বন্ধ থাকার সুযোগে মনে হয় বিদ্যালয়ে ওই বখাটেরা নিরাপদ আড্ডার স্থানে পরিণত করেছে। বিদ্যালয় খোলা জানা সত্ত্বেও তারা ছাদে ওঠে ও দুইজনে ঝগড়া করতে থাকে। এক পর্যায়ে সহকারী শিক্ষক সোলাইমান ও শাহনাজ পারভীন বিদ্যালয় ত্যাগ করতে বলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই দুই বখাটে তার উপর হামলা চালায়। এ সময় আমি এগিয়ে গেলে তারা আমার উপরও হামলা করে। এ সময় তাদের আটক করা হয়। পরে আটক ওই বখাটেদের অভিভাবকরা এসে জোরপূর্বক তাদের ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। মোবাইলে ওই ভিডিও  ধারণ করতে শুরু করেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহনাজ পারভীন। এতে অভিভাবকসহ ওই বখাটেরা আরো ক্ষুব্ধ হয়ে সহকারী শিক্ষক শাহনাজ পারভীনকে লাঞ্ছিত করে। রাতে আমি বাদী হয়ে এবং ওই দুই বখাটেকে আসামি করে গোপালপুর থানায় মামলা করি।  

এ বিষয়ে গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ওই দুই বখাটেকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার তাদের আদালতে প্রেরণ করলে আদালতের বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।