‘ভাস্কর্যবিরোধীরা ধর্মকে শিল্পের প্রতিদ্বন্দ্বী বানাতে চায়’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২২, ১৯:৫৮

মুর্খরা ধর্মকে ইস্যু করে ভাস্কর্যের বিরোধিতা করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক বিশেষ ভাস্কর্য প্রদর্শনীর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ভাস্কর্য শুধু বাংলাদেশে নয়; তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়াসহ সব মুসলিম রাষ্ট্রেই আছে। এরাই ভাস্কর্যবিরোধী, যারা ব্রিটিশ আমলে বলেছিল ইংরেজি শিক্ষা হারাম। এরা ধর্মকে সব জায়গায় ব্যবহার করে ভালো ও সুন্দর বিষয়গুলোর সঙ্গে ধর্মকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়।’
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে। আমি আমার নির্বাচনি এলাকা গাজীপুরে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছি। আমরা যেখানে আমার সঙ্গীদের হারিয়েছি, সেখানে বাংলাদেশের প্রথম ভাস্কর্য স্থাপিত হয়েছে। আমি সেখানে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পেরে গর্বিত।’
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের ৫০টি প্রজেক্টের মধ্যে অন্যতম হলো ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক ভাস্কর্য প্রদর্শনী। এটার জন্য যখন মন্ত্রণালয়ের চিঠিটি পেয়েছিলাম তখনই মনে হয়েছিল এটা একটা সুযোগ জাতীয় পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান রাখার। সেই সুযোগ আমরা পেয়েছি এবং কাজে লাগিয়েছি। এখানকার প্রদর্শনীর কালেকশন ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধ।’
উপাচার্য বলেন, ‘আমি মনে করি, যারা ভাস্কর্যের বিরোধিতা করে উগ্রতা ছড়ায় এভাবে ভাস্কর্য নির্মাণের মাধ্যমে তাদের (উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তির) সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। সারাদেশের মুক্তাঙ্গনের সব ভাস্কর্য নিয়ে একটি সংরক্ষণশালা করতে হবে। আমাদের চারুকলা অনুষদ এ বিষয়ে একটা প্রপোজাল তৈরি করে দেবে। মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সুদৃষ্টি দেবে বলে আশা করি।’
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন ভাস্কর্য বিভগের চেয়ারপারসন নাসিমা হক মিতু ও বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
সমাপনী অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ভাস্কর্য চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ভাস্কর হামিদুজ্জামান খানকে সম্মাননা প্রদান করা হয় এবং প্রদর্শনী থেকে সেরা ৩টি ভাস্কর্যের ভাস্করকে সম্মাননা স্মারক এবং ৫০ হাজার করে টাকা পুরষ্কার দেওয়া হয়।