
রামু বোটানিক্যাল গার্ডেন
কক্সবাজারের একমাত্র বোটানিক্যাল গার্ডেন অযত্নে অবহেলায় ও বাজেট বরাদ্দ না থাকায় পরিচর্যার অভাবে শ্রী হারাতে বসেছে। যে গার্ডেন পর্যকদের কোলাহলে মুখরিত থাকার কথা ছিল, সেই গার্ডেন বর্তমানে প্রাণহীন হয়ে রয়েছে। অবশ্য কর্তৃপক্ষ সরকারের একেবারে উচ্চ পর্যায়ে বার-বার দৃষ্টি আকর্ষণ করা সত্ত্বেও টনক নড়ছে না কারও।
রামু উপজেলার রাজারকুল এলাকায় গড়ে ওঠা এই বিনোদনকেন্দ্রটি অযত্ন-অবহেলায় দিন দিন জৌলুস হারাচ্ছে। কমেছে দর্শনার্থীর সংখ্যাও। কর্তৃপক্ষ বলছে, লোকবল সংকট, অর্থাভাবসহ বিভিন্ন কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার এবং পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন পর্যটন স্পট থাকলেও শিশু-কিশোর প্রকৃতিপ্রেমী বিনোদনের জন্য নেই কোনো পার্ক বা চিত্ত বিনোদন কেন্দ্রে। কক্সবাজার শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে রামুর রাজারকুলে বোটানিক্যাল গার্ডেনটি গড়ে তোলা হলেও, যথাযথ পরিচর্যা না থাকায় এখন ঝোঁপ-জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। এতে করে বোটানিক্যাল গার্ডেনটি পরিত্যক্ত ও অকার্যকর হয়ে পড়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটক, শিক্ষার্থী ও কোমলমতি শিশু-কিশোররা বিনোদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ২০১৩ সালের ৫ জুলাই কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগ রামু উপজেলার রাজারকুল বনভূমির ৬৫ একর জায়গায় গড়ে তোলা হয়। যে উদ্দেশ্য লক্ষ্য নিয়ে গার্ডেন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
রামু বোটানিক্যাল গার্ডেনে বেড়াতে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও পর্যটক বলেন, অনেক আগ্রহ নিয়ে এই গার্ডেনে এসেছি; কিন্তু এখানে দেখার মতো কিছু নেই। এক সময় যে ফুলের বাগান ছিল, তা এখন আর নেই।
ঢাকা থেকে প্রকৃতিপ্রেমি শিক্ষক নাঈমা রহমান ‘একদল শিক্ষার্থী নিয়ে রামু বোটানিক্যাল গার্ডেন দেখতে যান। সেখানে গিয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের দৈন্যদশায় তিনি খুবই হতাশ হয়ে বলেন, মাত্র তিন বছর আগেও এত বাজে অবস্থা ছিল না। তখন ফুল ও হরেকরকম সারিবদ্ধ গাছপালা ছিল, ছিল নানা ধরনের জীববৈচিত্র্য- যা এখন আর নেই। বিভিন্ন প্রজাতির গার্ডেনে ফুলের যে বাগানগুলো ছিল, তা নেই। পুরো গার্ডেনে বনবিভাগের নিলামের জন্য রাখা গাছের স্তূপ।
বোটানিক্যাল গার্ডেনের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে গার্ডেনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন বলেন, রামুতে বোটানিক্যাল গার্ডেনটি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এ গার্ডেনটি অনেক আগে প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও, এখনো পর্যন্ত গেজেটভুক্ত না হওয়ায় দর্শনার্থীদের কাছ থেকে টিকেট ফি নেওয়ার অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। লোকবলের অভাবে পুরো বোটানিক্যাল গার্ডেনে ঝোঁপ-জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। বাজেট পেলে বাগানের কাজ পুরোদমে শুরু হবে। এই গার্ডেন ২০০ একরে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।