তাহিরপুরে শিশু তোফাজ্জল হত্যা তদন্তে পুলিশ সুপার

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২০, ১০:৫৪

নিহত তোফাজ্জল। ছবি: সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জে
তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তে ৭ বছরের শিশু তোফাজ্জল হোসেন হত্যার ঘটনায় তদন্তে
নেমেছেন সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান। তিনি ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা লুঙ্গি
ও দুটি ভেজা বালিশের কভার উদ্ধার করেছেন।
সোমবার
(১৩ জানুয়ারি) দুপুরে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল
শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়নের বাঁশতলা গ্রামে অভিযান চালিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার
হওয়া হবি মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়ার ঘরের কাঠের বাক্স থেকে এগুলো উদ্ধার করে। রাসেল
মিয়া নিহত তোফাজ্জল হোসেনের সম্পর্কে চাচা।
পুলিশ
সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, শিশুটির নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের সনাক্ত ও
এর রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ ৭ আসামিকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হবি মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়ার বসতঘর থেকে লুঙ্গি ও দুটি
বালিশের কভার জব্দ করা হয়। শিশু তোফাজ্জল হোসেন হত্যাকাণ্ড দ্রুততম সময়ে অধিক
তদর্ন্তের মাধ্যমে চার্জশিট গঠন করা হবে। খুনিদের কেউ রেহাই পাবে না।
উল্লেখ্য,গত ৮ জানুয়ারি
গ্রামের মাঠে ওয়াজ মাহ্ফিল থাকায় বিকালে শিশু তোফাজ্জল ওয়াজ মাহ্ফিলের মাঠে যায়।
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামলেও তোফাজ্জল হোসেন বাড়ি না ফেরায় গভীর রাত পর্যন্ত
প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজন ও তোফাজ্জলের বন্ধুদের বাড়িতেও খোঁজাখুঁজি করে তার
কোন সন্ধান না পাওয়ায় তোফাজ্জলের দাদা জয়নাল আবেদীন ৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে
তাহিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডি করার পর শুক্রবার ভোর রাতে
বাড়ির বসতঘরে তোফাজ্জলের একজোড়া জুতা ও একটি চিঠি পায় পরিবারের লোকজন। চিঠিতে লেখা
ছিলো-তোমাদের ছেলে ভালো আছে,টেকেরঘাটে আমার বন্ধুর বাড়িতে তাকে রেখে এসেছি। ৮০ হাজার
টাকা দিলে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। বাড়ির গোয়াল ঘরে রাত ৪টায় টাকা নিয়ে থাকবে। কথা
মত এলাকাবাসীর পরার্মশ নিয়ে দিনমজুর পিতা শুক্রবার রাতে অপহরণকারীদের কথামতো গোয়াল
ঘরে টাকা রেখে অপেক্ষা করে। ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত না আসায় সালমান নামাজ আদায় করার
জন্য ওযু করতে যায়। এসময় গোয়ালঘরের সামনে শব্দ শোনা যায়। সালমান গিয়ে দেখে
সিমেন্টের মুখবন্ধ একটি বস্তা। পরে বস্তার মুখ খুলে দেখা যায় তোফাজ্জলের লাশ। পরে
পরিবারের সবাই এসে পুলিশকে খবর দেয়। পরে প্রতিবেশি তোফাজ্জলের ফুফা সেজাউল কবির ও
তার বাবা কালা মিয়াকে সন্দেহজনকভাবে পুলিশে দেয় তারা।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা থানার ওসি (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন,শিশু তোফাজ্জল অপহরণ ও হত্যাকান্ডের মামলায় সন্দেহভাজন দাদা,চাচা,ফুফু,ফুফাসহ ৭ জনকে রবিবার দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।