
সেতুর উভয় পাশে চলাচলের কোনো রাস্তা নেই। ছবি : নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় মাত্র আধা কিলোমিটারের মধ্যে দুটি সেতু থাকা সত্ত্বেও ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে আরেকটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণাধীন ওই সেতুর উভয় পাশে চলাচলের কোনো রাস্তা নেই।
উপজেলার জোয়াড়ী বাজারসংলগ্ন জোয়াড়ী ও নটাবাড়িয়া মণ্ডলপাড়ার মধ্যবর্তী বড়াল নদীতে এমন ‘অপ্রয়োজনীয়’ ও ‘অপরিকল্পিত’ সেতু নির্মাণে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।
সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধের জন্য বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের রাজশাহী প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বড়াইগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের অধীনে জোয়াড়ী এলাকায় ৫০ ফুট দীর্ঘ একটি ফুটওভার সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রায় ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে নওগাঁর ঠিকাদার মুসলেম উদ্দিন সেতুটি নির্মাণ করছেন।
গতকাল মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সরেজমিন দেখা যায়, ইতোমধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। একপাশে ইট, পাথর, বালি ও সিমেন্ট জড়ো করে রাখা হয়েছে। নির্মাণাধীন সেতুর উত্তরাংশে পায়ে হাঁটার একটি সরু রাস্তা থাকলেও দক্ষিণাংশে কোনো রাস্তার অস্তিত্ব নেই। এ পাশে প্রায় ৮০ বিঘা জমিতে অর্ধশত বছরের পুরনো আম বাগানসহ নদীর তীর ঘেঁষে কলাবাগান ও কয়েকটি পরিবারের বসতবাড়ি রয়েছে। আর এমন রাস্তাবিহীন স্থানেই চলছে সেতু নির্মাণের কাজ।
এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা রাশিদুল ইসলাম জানান, যেখানে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে, তার উভয়পাশে মাত্র আড়াইশ মিটার দূরে জনসাধারণের চলাচলের জন্য দুটি সেতু রয়েছে। অথচ এখানে কোনো রাস্তা না থাকা সত্ত্বেও সরকারি টাকা ব্যয় করে অপ্রয়োজনে আরেকটি সেতু নির্মাণ করার কোনো দরকার নেই।
নটাবাড়িয়া গ্রামের কৃষক রবিউল করিম বলেন, জনসাধারণের চলাচলের জন্য পাশাপাশি দুটি সেতু থাকার পরও অপরিকল্পিতভাবে রাস্তাবিহীন আরেকটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এখানে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে কেউ রাস্তাও দেবে না। ফলে এ সেতু নির্মাণ সরকারি টাকার অপচয় ছাড়া কিছুই না।
এ ব্যাপারে বরেন্দ্র উন্নয়ন বহুমুখী কর্তৃপক্ষের বড়াইগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, নদীর দক্ষিণ পাশে রাস্তা না থাকলেও উত্তর পাশে রয়েছে। জনগণের স্বার্থেই সেতুটি নির্মাণ করতে চেয়েছিলাম, তবে তারা না চাইলে করবো না।