শামুকখোল পাখির
কলকাকলীতে মুখর মাছিমপুর গ্রাম

জাকারিয়া জাহাঙ্গীর, জামালপুর
প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২২, ১৫:১১

শামুকখোল পাখি। ছবি: জামালপুর
জামালপুরের মাছিমপুর গ্রাম এখন হাজার হাজার শামুকখোল পাখির কলকাকলীতে মুখর। গত ২০ বছর ধরে পৌরসভার ওই গ্রামের নূরুল হক মাস্টারের বাড়ির শিমুল ও কড়াই গাছে নিশ্চিন্তে বসবাস করে আসছে পাখিগুলো।
অনুকূল পরিবেশ পেয়ে প্রতি বছর বারবারই ফিরে আসে এসব পাখির দল, থাকে একটানা ৬ থেকে ৮ মাস। দূর থেকে দেখতে সাদা বকের মতো মনে হলেও, মূলত এদের নাম শামুকখোল। লম্বা ঠোঁট দিয়ে শামুক খুঁজে খুঁজে খায় বলে এদের নাম শামুকখোল। তবে ইংরেজি নাম ‘এশিয়ান ওপেন বিল’, বৈজ্ঞানিক নাম ‘এনাসটমাস ওসিটেন্স’।
প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব পাখি অনুকূল পরিবেশে ঝাঁকে ঝাঁকে বাস করতে পছন্দ করে।
স্থানীয়রা জানায়, পাখির কলকাকলিতেই ঘুম ভাঙে এই গ্রামের মানুষের। খুব সকালে দল বেঁধে বেরিয়ে যায় পাখিগুলো; সারাদিন ঘুরে-ফিরে সন্ধ্যার আগে ফিরে এসে আশ্রয় নেয় নুরুল মাস্টারের বাড়ির শিমুল ও কড়ই গাছের ডালে। বাড়ির লোকজন পরম মমতায় নিরাপদ আশ্রয় করে দেয় এসব পাখিকে। এদিকে পাখিগুলো দেখতে নুরুল মাস্টারের বাড়িতে ভিড় জমায় উৎসুক জনতা। সেখানে নেই কোনো পাখি শিকারি, নেই স্থানীয়দের উৎপাতও।
স্থানীয় কয়েকজন কৃষক বলেন, এই পাখিগুলো ধানক্ষেতে থাকা শামুক আর পোকা খেয়ে থাকে। ফলে একদিকে যেমন ধানক্ষেত পোকা মাকড় থেকে রক্ষা পায়, অন্যদিকে পাখির বর্জ্য সারও হয়।
জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, শামুকখোল খাবারের প্রাচুর্য থাকলে অল্প জায়গায় গাদাগাদি করে থাকতে পছন্দ করে। এ পাখির ঠোঁট অনেকটাই যাঁতাকলের মতো কাজ করায় শক্ত শামুক অনায়াসে গলধঃ করণ করতে পারে। যদি এই পাখিগুলোকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারা যায়, তাহলে এটি আমাদের জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।