আশ্রয়ণে বসবাসকারীদের মানবেতর জীবনযাপন

রিফাত রহমান, চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২২, ১৪:৪৮

ছবি: চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের আকন্দবাড়ীয়া গ্রামে আশ্রয়ণে বসবাসকারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত ২৩টি ব্যারাকের সবগুলো ঘর জরাজীর্ণ হয়ে বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে সেখানে দুর্গন্ধময় পরিবেশে বসবাস করছেন ১০০টি পরিবারের ৩০০ জন সদস্য। এছাড়া গুচ্ছ গ্রামের ৭০টি ঘরেরও একই দশা। এই আবাসনে নেই বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা।
সরেজমিনে দেখা যায়, আশ্রয়ণের অধিকাংশ ঘর জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন এ অবস্থায় থাকার কারণে ঘরগুলো বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে বেগমপুর ইউনিয়নের ২৩ নন্বর আকন্দবাড়িয়া গ্রামের ১ নম্বর খাস খতিয়ানের সরকারি জমিতে রজনীগন্ধা ও পারিজাত আশ্রয়ণ নামে ২৩টি ব্যারাকে সারিবদ্ধভাবে গড়ে তোলা হয় টিনশেড নির্মিত ঘর। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে এ ব্যারাক নির্মাণ করা হয়। সেখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় অসহায় হতদরিদ্র ১৯০টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের। একই সারিতে পাশাপাশি অপরিকল্পতি ঘর হওয়ায় এখানে বসবাসের জায়গা পেলেও, অনেকেই বসবাস করতে চায়নি এবং তারা অন্যত্র চলে যায়।
একটি সূত্র জানিয়েছে, এখানে ঘর নিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে, আবার কেউ মাদক কারবারে জড়িয়ে আবাসন ছাড়া হয়েছে। ওই ঘরগুলোতে কে কখন কোথা থেকে এসে বসবাস করছেন, তার সঠিক হিসাব কেউ রাখে না।
বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হোসেন বলেন, ইউনিয়নে যতগুলো আশ্রয়ণের ঘর আছে তা নির্মাণ এবং দেখভাল করে থাকে উপজেলা প্রশাসন। যেখানে জনপ্রতিনিধিদের কোনো দায়দায়িত্ব নেই। সরকারি বরাদ্দের টাকা খরচ করে গড়ে তোলা ঘরগুলো আজ বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। আবার একই নামে বিভিন্ন জন একাধিক ঘর নিয়ে রেখেছে। যেখানে গরু-ছাগল পোষা হচ্ছে। মানুষের সাথে পাশাপাশি ঘরে পশুও বসবাস করছে।
বেগমপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, সরেজমিনে তদন্ত করে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো মেরামত করার জন্য সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট। আশা করি, অতি তাড়াতাড়ি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূইয়া বলেন, ব্যারাক মূলত সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে নির্মাণ করা হয়েছে। এই ব্যারাকের জমি এখনো সরকারি সম্পদ। সেটা ব্যবহারকারীদের দলিল করে হস্তান্তর করা হয়নি। সে কারণেই এখানে সমস্যা রয়েছে। তবে আশ্রয়ণে বসবাসের অনুপোযোগী ঘরগুলো চিহ্নিত করে তা মেরামতের জন্য ৭৪ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দের টাকা আসলেই মেরামতের কাজ শুরু হবে।