ইট ভাটার ধোঁয়া ও গ্যাসে পুড়েছে কৃষকের স্বপ্ন

রফিক মজিদ, শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২২, ১৭:৪৫

ক্ষতিগ্রস্ত বোরো ধানের ক্ষেত। ছবি- শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুরে সদর উপজেলায় অবৈধ ইটভাটার ধোঁয়া ও সৃষ্ট গ্যাসে প্রায় ৮০ একর বোরো ধানের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ওই এলাকার অন্তত ১৩০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গতকাল রবিবার (১৭ এপ্রিল) উপজেলার সুলতানপুর ও কারারপাড়া নামে ওই দুই গ্রামে গিয়ে এই ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।
এতে দেখা যায়, অবৈধ ইটভাটার ধোঁয়া, গরম বাতাস ও গ্যাসের কারণে আশপাশের ফসলি ধানের জমি পুড়ে গেছে। বিস্তীর্ণ সবুজ ধান ক্ষেত এখন মড়া ক্ষেতে পরিণত হয়েছে। গাছের পাতা শুকিয়ে গেছে, ধানগুলো হয়েছে চিটা। এছাড়া আশপাশের বাঁশঝাড়, মেহগনি বাগানসহ বিভিন্ন ফলদ ও বনজ গাছ বিবর্ণ হয়ে গেছে। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। তারা এখন ক্ষতিপূরণের জন্য হা-হুতাশ করে কান্নাকাটি করছে।
এনিয়ে কথা হয় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মনসুর, কালাম, আক্কাস, আমজাদ, ওয়াহাব, হাবি, শাহজাহান, কবির, রেহানা, মান্নান ও সোহাগসহ কয়েকজনের সঙ্গে।
তারা জানান, গত ছয় বছর আগে স্থানীয় শিল্পপতি মরহুম ইদ্রিস মিয়া ওই ইটভাটা গড়ে তোলেন। ভাটাটির লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। এনিয়ে এলাকাবাসী অভিযোগ করেও কোন সুরাহা পায়নি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাসান খুররম বলেন, ভাটার মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকাবাসী জিম্মি হয়ে পড়েছে। এবারের ধান ক্ষেতের ক্ষতিতে কৃষকরা পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
সদর উপজেলার বাজিতখিলা ইউনিয়ন ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার মো: লুৎফর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেতগুলো পরিদর্শন করে ক্ষতির বিষয়ের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
এবিষয়ে জিহান অটো ব্রিকসের ম্যানেজার মো. মোশারফ হোসেন বলেন, আমাদের ইট ভাটা বৈধ। ভাটার আগুনের কারণে ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে এই অভিযোগ সত্য নয়।
উপজেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক নয়ন কুমার রায় বলেন, বিষয়টি দেখার দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের। তারাই সেটি বলতে পারবেন।
জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ বলেন, আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে। ওই ক্ষেতের ধান কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের গবেষক এনে পরীক্ষা করা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।