Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

ক্লিয়ারেন্স প্রদানে ভেরিফিকেশনের জন্য বাসায় যাবে না পুলিশ

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২২, ১০:৫০

ক্লিয়ারেন্স প্রদানে ভেরিফিকেশনের জন্য বাসায় যাবে না পুলিশ

পর্যালোচনা সভায় ডিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রদানে ভেরিফিকেশন তথা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আবেদনকারীর বাসায় না যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেছেন, পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদনকারীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কিনা তা পুলিশের ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিডিএমএস) থেকে যাচাই করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আবেদনকারীকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রদান করতে হবে। 

গতকাল সোমবার (১৮ এপ্রিল) ডিএমপি সদর দপ্তরে মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় এসব নির্দেশনা দেন ডিএমপি কমিশনার।

তিনি জানান, ডিএমপির অর্ধশত থানার মধ্যে কোন কোন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিতে কতদিন সময় নিচ্ছেন সদর দপ্তর থেকে সেই বিষয়টি মনিটরিং করা হচ্ছে। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার বিনিময়ে কোনো পুলিশ সদস্য অর্থ দাবি করলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সাধারণত বিদেশে যেতে এবং সরকারি-বেসরকারি চাকরির জন্য বা ব্যবসায়ীক কাজে জরুরিভিত্তিতে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন হলে দেশের নাগরিকরা ক্লিয়ারেন্স পেতে আবেদন করেন। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর আবেদনকারীর নাম-ঠিকানা যাচাই-বাছাই করেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আবেদনকারীর কাছ থেকে উৎকোচ দাবি করেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা। তখন আবেদনকারীরা অনেকটা বাধ্য হয়ে উৎকোচ দেন।

ডিএমপির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। যদিও পাসপোর্ট ইস্যুর সময় নাম-ঠিকানা যাচাই-বাছাই করে থাকে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)। পাসপোর্টের ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রেও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে পুলিশের অর্থ বা উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। 

তিনি আরো বলেন, জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো পাসপোর্ট তৈরিতে পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ তোলেন। এসব কারণে এই ভেরিফিকেশন বন্ধ করা যায় কিনা সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

সম্প্রতি একটি আলোচনা সভায় বাংলাদেশ জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর মহাপরিচালক শহীদুল ইসলাম মন্তব্য করেন, পাসপোর্ট ইস্যুর ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজনীয়তা নেই।

তার এ বক্তব্যের পর অনেকে আবার প্রশ্নও তুলেছেন। গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আব্দুন নূর তুষার ওই বক্তব্যের পর নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ‘পাসপোর্ট নবায়ন করতে গেলে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারণ, অর্থের বিনিময়ে দেশে রোহিঙ্গারাও বাংলাদেশি পাসপোর্ট নবায়ন করতে পারেন।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের বিশেষ শাখায় ইমিগ্রেশনের পর ভেরিফিকেশন শাখাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু এই শাখার কর্মকর্তারা ভেরিফিকেশনের বিনিময়ে সবচেয়ে বেশি উৎকোচ গ্রহণ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। উৎকোচ ছাড়া পাসপোর্টের ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হয়েছে এমন ব্যক্তি পাওয়া দুষ্কর।

সূত্র জানিয়েছে, পুলিশের বিশেষ শাখায় পাসপোর্টের ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব নিতে রীতিমতো তদবির করেন উপ-পরিদর্শন পদমর্যাদার কর্মকর্তারা। দিনে একাধিক পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন করতে পারলে কয়েক হাজার টাকা আয় হয় বলে এসআই পর্যায়ের কর্মকর্তারা এই শাখাকে একটু বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।

পুলিশের বিশেষ শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনসহ যেকোনো আইনি সহায়তার বিনিময়ে অর্থ দাবির বিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। তার দাবি, আগের চেয়ে বর্তমান অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আগে ভেরিফিকেশনের সময় অর্থ নেওয়ার যে কালিমা পুলিশের ওপর ছিল, সেটাই এখনো বহন করতে হচ্ছে।’


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫