শেরপুর সীমান্তে মানুষ ও হাতির ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

রফিক মজিদ, শেরপুর
প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২২, ১৪:১২

দীর্ঘদিন থেকে চলছে হাতি ও মানুষের লড়াই। ছবি: শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি, ঝিনাইগাতি ও শ্রীবর্দী উপজেলা ভারত সীমান্তের গারো পাহাড় এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে চলছে হাতি ও মানুষের লড়াই। এতে হাতি-মানুষ হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি মানুষের ফসলের ক্ষেত ও বাড়ি-ঘর ধ্বংস হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
গত ৩ দিন ধরে জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলার বিভিন্ন সীমান্তবর্তী গ্রামে চলছে হাতি-মানুষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। সীমান্তজুড়ে এখন ধান ক্ষেতের সবুজের সমাহার। কয়েক দিনের মধ্যে এ সবুজ ধান পেকে সোনালি রূপ ধারণ করবে। কৃষকের মুখেও ফুটবে হাসি; কিন্তু ক্ষুধার্থ বন্য হাতির লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে ওই সবুজ ধান ক্ষেতের ওপর। প্রতি রাতেই হাতির দল দলবদ্ধ হয়ে নেমে আসে ওইসব ফসলের ক্ষেতে। রাতারাতি সাবার করে দিয়ে যায় সবুজ ধান। এতে সীমান্তের কৃষকদের মধ্যে এখন রাতের ঘুম নেই।
প্রতি রাতেই রাত জেগে তাদের ধানক্ষেত পাহারা দিতে হচ্ছে। প্রতি রাতেই চলে হাতি-মানুষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এসময় সীমান্তের কৃষকরা কেরোসিন তেল দিয়ে মশাল জ্বালিয়ে ও লাঠিসোটা নিয়ে হাতির দলকে ধাওয়া করলে, হাতির দলও উল্টো মানুষের ওপর পাল্টা ধাওয়া করে। এসময়ই ঘটে হতাহতের ঘটনা। যদিও ৪ এপ্রিল রাতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে ফসলসহ বনের বিভিন্ন গাছ, কৃষকের সবজি ক্ষেত ও বাড়ি-ঘরও ক্ষতি সাধন হয়েছে।
সর্বশেষ ৪ এপ্রিল রাতে জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী আন্ধারুপাড়া ও ডালুকোনা গ্রামে একদল হাতি আক্রমণ চলিয়ে আবুল মিয়া, লিটন মিয়া, সাহাবুদ্দিন, লুইস নিমমিনজা, মার্টিন মারাকসহ অনেকের ক্ষেত বিনষ্ট করে। এ ঘটনায় ওই গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের মানুষ এখন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। সীমান্তের কৃষকরা রয়েছেন আতঙ্কগ্রস্ত।
চলতি বছর হাতির হামলায় সীমান্তের কোনো মানুষ মারা না গেলেও, মানুষের হামলায় হাতিও মারা পড়েছে ২টি। তবে ১৯৯৫ সাল থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত মানুষ মারা গেছে ৭০ জন এবং কয়েক কোটি টাকার ফসল, ঘর-বাড়ি ও গাছপালা বিনষ্ট হয়েছে।
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভীন জানায়, ক্ষতিগ্রস্তদের কয়েকজন এসেছিলেন। এ বিষয়ে তাদের তাৎক্ষণিক আলোর জন্য কেরোসিন তেল দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।