Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

করোনা সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় পাবনার তাঁতিরা

Icon

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২২, ১২:১৭

 করোনা সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় পাবনার তাঁতিরা

আধুনিক প্রযুক্তির কাছে টিকতে পারছে না সনাতন পদ্ধতিতে নির্ভর তাঁত ও তাঁতি সম্প্রদায়। ছবি: সংগৃহীত

করোনাকালের সংকট কাটিয়ে পাবনার তাঁতিরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। তারা বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ নিয়ে বন্ধ তাঁত সচল করছেন। গত দুবছরের লোকশান কাটিয়ে উঠতে তাঁত পল্লীতে এখন চলছে দিনরাত ব্যস্ততা। আধুনিক প্রযুক্তির গ্রাফিক্স ডিজাইন ব্যবহার করে শাড়ি লুঙ্গির চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই শিল্পকে নিয়েই তারা আশার আলো দেখছেন। 

অন্যদিকে আধুনিক প্রযুক্তির কাছে টিকতে পারছে না সনাতন পদ্ধতিতে নির্ভর তাঁত ও তাঁতি সম্প্রদায়। 

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে এ অঞ্চলের অনেক তাঁতি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিত্য নতুন ডিজাইনের শাড়ি লুঙ্গি তৈরি করছেন। তাদের উৎপাদিত শাড়ি লুঙ্গি ইতোমধ্যে দেশের মধ্যে ব্যাপক সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশের চাহিদার পাশাপাশি এ অঞ্চলের শাড়ি, লুঙ্গি,গামছা প্রতিবেশী ভারতেও ব্যাপক ভাবে সমাদৃত হচ্ছে। ভারতের ব্যবসায়ীরা ঈদ, পূজা ও বিভিন্ন উৎসবকে সামনে রেখে পাবনা জেলার বিভিন্ন পাইকারী হাটে এসে সে সব শাড়ি লুঙ্গি কিনে নিচ্ছেন। দেশ-বিদেশে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই বন্ধ তাঁত কারখানা আবার চালু করেছেন।

পাবনা সদর থানা এলাকার জালালপুর নতুন পাড়ার আকমল নামের এক তাঁত কারখানার মালিক জানান, করোনার দুবছর তাদের কারখানার উৎপাদিত লুঙ্গির চাহিদা কমে গিয়েছিল। কারখানার ৩০টি তাঁতের মধ্যে ১৫টিই বন্ধ করে রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু করোনা সংকট কেটে গেলে তাঁত উৎপাদন কৌশল পরিবর্তন করে সেগুলো আধুনিকায়ন করে উৎপাদন শুরু করেছেন। গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে প্রতিদিন নিত্যনতুন নকশার শাড়ি লুঙ্গি নিয়ে বাজারে হাজির হচ্ছেন। এতে করে ভাল দামে শাড়ি লুঙ্গি বিক্রি করতে পেরে তারা আশার আলো দেখছেন। 

তিনি বলেন, যারা পুরাতন পদ্ধতিতে শাড়ি লুঙ্গি তৈরি করছেন তারা এই ঈদের বাজারে উৎপাদিত কাপড় বিক্রিতে সুবিধা করতে পারছেন না। প্রতিযোগিতা ও আধুনিকতায় যারা টিকতে পারছেন না, তারা পিছিয়ে পড়ছেন। 

রবিউল ইসলাম নামে তাঁত কারখানার এক মালিক জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এলাকার প্রান্তিক তাঁতি যারা আগের আমলের তাঁত লাটাই ব্যবহার করছেন তারা সময়ের সাথে তাল মেলাতে না পেরে ক্ষতির মধ্যে রয়েছেন। এসব তাঁতিরা নিত্য নতুন ডিজাইন তৈরি করতে সক্ষম না হওয়াতে শ্রমের মজুরি হারাচ্ছেন। অনেকে ক্ষতির মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসতে না পেরে ঋণগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছেন। ঐতিহ্যবাহী পাবনার তাঁত শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সরকারি সাহায্য সহযোগিতা প্রয়োজন। সরকার বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের মাধ্যমে তাঁতিদের জন্য স্বল্প সুদের ঋনের ব্যবস্থা করলে বন্ধ হওয়া তাঁতগুলো আবার সচল হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। 

উল্লেখ্য পাবনা জেলা তাঁতবোর্ডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জেলায় হাত লুম(খটখটি),পাওয়ার লুম(চিত্তরঞ্জন) ও আধুনিক প্রযুক্তির ৬৪ হাজার তাঁত রয়েছে। এ শিল্পের সাথে প্রায় দুই লাখ মানুষের জীবন জীবিকা নির্ভর। সরকার এ বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে যেমন আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে তেমনি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অগ্রগতি বাড়তে পারে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫