তেঁতুলতলা মাঠ ইস্যুতে মানবাধিকার কমিশনকে ২৪ বিশিষ্ট নাগরিকের চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২২, ২৩:০৫

থানা হাজত থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সৈয়দা রত্না ও তার ছেলে।
রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষায় আন্দোলনকারী সৈয়দা রত্না ও তার ছেলেকে আটকের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট ২৪ জন নাগরিক।
আজ শনিবার (৩০ এপ্রিল) বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) আইন উপদেষ্টা এস এম রেজাউল করিম এই চিঠির কপি গণমাধ্যমে পাঠান।
চিঠিতে সইদাতাদের মধ্যে রয়েছেন— হামিদা হোসেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধুরী, মোবাশ্বের হোসেন, জেড আই খান, শিরীন হক, পারভীন হাসান, ডা. মালেকা বানু, ইফতেখারুজ্জামান, খুশী কবির, ফেরদৌস আজিম, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শামসুল হুদা, রেহনুমা আহমেদ, শহিদুল আলম, সারা হোসেন, জাকির হোসেন, সামিনা লুৎফা, মির্জা তাসলিমা সুলতানা, আলমগীর কবীর, আরিফ নূর, রুনু আলী ও জামসেদ আনোয়ার।
তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষার দাবিতে সম্প্রতি আন্দোলন আন্দোলন চালিয়ে আসছিল এলাকার বাসিন্দারা। গত ২৪ এপ্রিল মাঠটি রক্ষার দাবিতে আন্দোলনকারী সৈয়দা রত্না ও তার কিশোর ছেলেকে পুলিশ ধরে নিয়ে ১৩ ঘণ্টা কলাবাগান থানায় আটকে রাখে। পরে প্রতিবাদের মুখে মধ্যরাতে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর আন্দোলনকারীরা মাঠ রক্ষায় আরও সোচ্চার হন। আন্দোলনের মুখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গত ২৮ এপ্রিল জানান, তেঁতুলতলা মাঠে আর কোনও নির্মাণ কাজ হবে না। জায়গাটি যেভাবে ছিল, সেভাবেই থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
ব্লাস্টের পক্ষ থেকে পাঠানো বিশিষ্টজনদের চিঠিতে সরকারি সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে চিঠিতে বলা হয়— বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যেকোনও ব্যক্তির প্রতি নিষ্ঠুরতা নিষিদ্ধ। যদি আটক ব্যক্তিদের মধ্যে একজন নাবালক হন, তবে পুলিশ কর্মকর্তাকে শিশু আইন, ২০১৩ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত বিধান মেনে চলতে হবে।
‘সংবিধান অনুযায়ী শিশুদের প্রতি সব ধরনের নিষ্ঠুরতা ও অবমাননাকর শাস্তিকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে। সুতরাং, শিশু আইন ২০১৩ অনুযায়ী, এভাবে কোনও শিশুকে গ্রেফতার ও আটক করা বেআইনি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক কাউকে গ্রেফতার করলে তার কাছের আত্মীয়স্বজনকে জানাতে হবে। কিন্তু কলাবাগান থানা রত্নাকে আটকের পর তার শিশুসন্তানকে আটক করে। সৈয়দা রত্নার সঙ্গে সারা দিন কাউকে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। এটি অনৈতিক ও বেআইনি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অমান্য করাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
তাই এই চিঠিতে সৈয়দা রত্না ও তার শিশুকে তুলে আনা এবং বেআইনিভাবে আটক, মুচলেকা নেওয়া ও হয়রানি করার ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানানো হলো।