প্রিয়জনের সাথে ঈদ করতে ঢাকা ছাড়ছেন নগরবাসী। ছবি: স্টার মেইল
সায়েদাবাদের টিকিট কাউন্টারগুলোতে নেই যাত্রীদের ভিড়। যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণে নিজ নিজ বাসের গন্তব্যের নাম ধরে বাসের স্টাফরা চিৎকার করে যাচ্ছেন। দীর্ঘসময় পর হয়তো ভরছে গাড়ি। তারপরই ছেড়ে যাচ্ছে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। এছাড়া কোনো কোনো বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
আজ রবিবার (১ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ও এর আশপাশের এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
গাড়িচালক ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার ঈদে ছুটি দীর্ঘ হওয়ার কারণে মূলত এসময়ে যাত্রীর চাপ নেই। কারণ মানুষ দীর্ঘসময় পাওয়ায় ঈদের দু/একদিন আগে আর ভিড় করে যাচ্ছে না। তবে আজ বিকেলে কিংবা আগামীকাল (সোমবার) যাত্রীর চাপ বাড়তে পারে বলেও মনে করছেন তারা।
পরিবারের চারজন সদস্য নিয়ে সিলেট যাবেন মো. আবুল হাশেম। তিনি সায়েদাবাদের জনপথ মোড়ে ঢাকা-সিলেট রুটে চলাচলকালী মিতালী পরিবহনের একজন স্টাফের সাথে ভাড়া নির্ধারণ করছিলেন। ওই বাসের কর্মী বলেন, ভাড়া একদম ৫০০ টাকা। আবুল হাসেম যেটা ভাড়া সেটাই নিতে বললেন, কিন্তু তিনি রাজি হলেন না।
পরে আবুল হাসেম বলেন, রেগুলার ভাড়া সাড়ে ৪০০ টাকার মতো। এখন ৫০০ টাকার নিচে যেতে চাচ্ছে না। মানুষের হাতে এমনি টাকা-পয়সা নেই, তারওপর ভাড়া বেড়ে গেছে।
যাত্রীরা অভিযোগ করেন, ২০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে তাদের কাছ থেকে।
সায়েদাবাদে মূল টার্মিনালের ভেতর গিয়েও দেখা যায় গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে, যাত্রী কম। ঢাকা-নোয়াখালীর রায়পুর রুটে চলাচলকারী জোনাকি পরিবহনের চালক স্বপন বলেন, অন্যান্য সময়ের তুলনায় যাত্রী একেবারেই কম। লম্বা ছুটি থাকায় মানুষ হয়তো ধাপে ধাপে চলে গেছে।
অন্যান্য সময়ে রায়পুরের ভাড়া ৩৭০ টাকা হলেও এখন কিছুটা বাড়বে বলেও জানান চালক স্বপন। তিনি বলেন, গাড়ি আসতে হচ্ছে একেবারে খালি। তাই যাওয়ার সময় ভাড়া কিছুটা বেশি না নিলে পোষাবে না।
ঢাকা-কোম্পানীগঞ্জ রুটে চলাচল করা তিশা গোল্ড পরিবহনের চালক মো. আল আমিন বলেন, গতকালকে একটি ট্রিপ দিয়েছি, এখন পর্যন্ত আর যাইতে পারি নাই। যাত্রী অনেক কম। অন্যান্য বছর ঈদের এই সময়ে যাত্রী টেনে কুল পাই না।
সায়েদাবাদ করাতিটোলার দিকে ঢাকা-হাজীগঞ্জ রুটে চলাচলকারী তিশা এক্সপ্রেসের কাউন্টারের ম্যানেজার মোহাম্মদ আলী একাই বসে ছিলেন। তিনি বলেন, এবার ঈদে প্রায় টানা ৯ দিনের ছুটি। তাই ধীরে-সুস্থে বাড়ি যাচ্ছে মানুষ। এ কারণে এখন যাত্রীর চাপ কম। কোনো কোনো বাসের দু-চারটি সিট খালিও যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, অন্যান্য বছর ঈদের এই সময়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিটে গাড়ি ভরে যেতো। এখন সেই গাড়ি এক ঘণ্টায়ও ভরছে যাচ্ছে না। এক ঘণ্টা পরও দেখা যাচ্ছে ৪/৫টি সিট খালি থাকছে। আমরা আশা ছাড়িনি, আজ বিকেলে বা কালকে যাত্রীর চাপ থাকবে বলে আশা করছি।
বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না দাবি করে মোহাম্মদ আলী বলেন, সরকার নির্ধারিত ভাড়া ৩২৭ টাকা, সেখানে আমরা ৩০০ টাকা নিচ্ছি।
রবিবার সন্ধ্যায় দেশের আকাশে শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেলে পরের দিন সোমবার (২ মে) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আর বাংলাদেশের কোথাও চাঁদ দেখা না গেলে সোমবার রমজান মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হবে। সেক্ষেত্রে ঈদ উদযাপিত হবে মঙ্গলবার (৩ মে)।