Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

নাটোরের উত্তরা গণভবনে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়

Icon

নাটোর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২২, ২০:৪০

নাটোরের উত্তরা গণভবনে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়

নাটোর উত্তরা গণভবন। ছবি- নাটোর প্রতিনিধি

ঈদের ছুটিতে নাটোর উত্তরা গণভবনে দর্শনার্থীদের ভিড় কয়েক গুণ বেড়েছে। ইতিহাসের স্থাপত্যকলার অন্যতম নিদর্শন ও ঐতিহ্যপূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় বাসভবন হিসেবে পরিচিত এ গণভবন। গণভবনের মূল ফটকের সামনে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আসা দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। 

গতকাল বুধবার (৫ মে) সকালে নাটোর উত্তরা গণভবনে সরেজমিনে গিয়ে গণভবনের মূল ফটকের সামনে টিকিটের জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় দর্শনার্থীদের।

জনপ্রতি ২০ টাকার টিকিট ক্রয় করে গণভবনের ভিতরে প্রবেশ করছে দর্শনার্থীরা। অনেকে সপরিবারে এসেছেন, অনেকে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবী নিয়ে দলবেঁধে গণভবনে ঘুরছেন দর্শনার্থীরা। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী নারী-পুরুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

উত্তরা গণভবনের মূল ফটক পার হলেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে দু’পাশে বিভিন্ন প্রজাতির সারি সারি ফুলের গাছ। গাছে ফুটেছে নানান রঙের দৃষ্টিনন্দন ফুল। সঙ্গে মিনি চিড়িয়াখানা আর সংগ্রহশালা দেখে খুশি শিশু-কিশোররা।

গণভবন প্রতিষ্ঠাতা:

দয়ারাম রায় ১৭৩৪ সালে ৪২ একর জমির উপর উত্তরা গণভবন রাজ প্রসাদটি নির্মাণ করেন। এ রাজবংশের রাজাগণ ১৭১০ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত এ রাজ্য শাসন করেন।

বিশালাকার এ গণভবনে রয়েছে দিঘী, বাগান, ইটালিয়ান গার্ডেন, চিড়িয়াখানা, নতুন সংগ্রহশালা ও পাখিদের অভয়াশ্রমসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বাহারি রকমের গাছপালা। পুরো গণভবনের চারপাশে উঁচু দেওয়াল দ্বারা বেষ্টিত। গণভবনে প্রবেশদ্বারে রয়েছি বিশাল এক ফটক। গণভবনের ভিতরে রয়েছে বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হরেক রকমারি বাহারি ফুল, ঔষধি গাছ। গণভবনের সামনের মাঠে ফুটেছে দৃষ্টিনন্দন গাঁদা ও গ্লাডিওলাস ফুল। 

গণভবনে ঢুকলেই যেন পর্যটকদের ফুলের সৌন্দর্য ও সুবাস দিয়ে অভ্যর্থনা জানায়। এ গণভবন প্রাঙ্গণে আছে ইতালি থেকে সংগৃহীত মনোরম ভাস্কর্যে সজ্জিত বাগান। যেখানে রয়েছে বিরল প্রজাতির নানা উদ্ভিদ। 

গণভবনে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী নলডাঙ্গা উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম সরদার বলেন, উত্তরা গণভবন আমার খুব প্রিয় একটি স্থান। সময় পেলেই বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে চলে আসি। বিশেষ করে গণভবনে অনেক রকমারি ফুলের গাছ রয়েছে। গাছে গাছে বাহারি ফুল ফুটেছে। এসব ফুলের গাছ আগে কখনো দেখিনি। 

জোছনা বেগম নামে এক দর্শনার্থী বলেন, গণভবনের সবকিছুই সুন্দর। বিশেষ করে রানীমহলে দেশি-বিদেশি আকর্ষণীয় ফুলের দৃষ্টিনন্দন গাছ। পুরো গণভবন জুরে সবুজ গাছপালায় ছায়া। এখানে মিনি চিড়িয়াখানায় দেশি-বিদেশি পশু-পাখি রয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে রোপণ করা একটি ‘হৈমন্তী’ গাছ রয়েছে।

দর্শনার্থী মিতু খাতুন বলেন, উত্তরা গণভবনের বাহির থেকে দেখলে বুঝার উপায় নেই, ভিতরে এত সুন্দর পরিবেশ। দেশ-বিদেশের বাহারি ফুল আর চারদিকে সবুজ গাছ আমাকে মুগ্ধ করেছে। সত্যিই বলতে অনেক সুন্দর একটি জায়গা।

কলেজের শিক্ষক শহীদুল হক সরকার বলেন, ঈদের ছুটিতে সপরিবারে ঘুরতে এসেছি। উত্তরা গণভবন চমৎকার একটি স্থান। এখানে এলে যে কেউ উত্তরা গণভবনের প্রেমে পড়ে যাবে। এখানে বসে আড্ডা দেয়া আর ঘুরে বেড়ানোর মতো পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। সবমিলিয়ে দারুণ একটি স্থান।

রবিউল আউয়াল নামে এক দর্শনার্থী বলেন, এখানে আগেও অনেক বার এসেছি। যত বার এসেছি ততই মুগ্ধ হয়েছে। পরিবার নিয়ে সময় কাটানোর মতো একটি জায়গা। আমি প্রায় পরিবার নিয়ে এ গণভবনে ঘুরতে আসি।

রাজশাহী থেকে মনিরুল ইসলাম নামে এক কিশোর বলেন, আমার পরিবারের সাথে এখানে বেড়াতে এসেছি। অনেক সুন্দর লাগছে, চারদিকে গাছ আর ফুল। আমার বেশি ভালো লেগেছে গণভবনের সংগ্রহশালা। ওখানে রাজা-রানীর ছবিসহ পুরনো অনেক আসবাবপত্র রয়েছে।

নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, ঈদের ছুটিতে উত্তরা গণভবনে দর্শনার্থীরা ভিড় বেড়েছে। এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন। দর্শনার্থীরা ২০ টাকা টিকিট ক্রয় করে গণভবন পরিদর্শন করতে পারছেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫