ছবিতে বাংলাদেশ সেনাবহিনীর প্রতিরক্ষা সামগ্রী ‘এমআরএলএস-৩০’। ছবি: সংগৃহীত
প্রতিরক্ষা সামগ্রীর কেনার পেছনে গেল দুই বছরে ১৬ কোটি ডলার ব্যয় করেছে সরকার। অথচ, শুধু ২০১৯ সালেই প্রায় ৭৪ কোটি ডলার মূল্যের সমপরিমাণ প্রতিরক্ষা সামগ্রী কিনেছিল বাংলাদেশ। প্রতিরক্ষা সামগ্রী কেনার প্রবণতা প্রায় ১০ গুণ কমেছে সরকারের।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিকে বেশি মনোযোগী হওয়ার কারণে বড় পরিসরে প্রতিরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ে সরকারের আগ্রহ কমেছে বলে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, কোভিড থেকে আমরা আমাদের অর্থনীতি মোটামুটি পুনরুদ্ধার করতে পেরেছি। এখন মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা এবং জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন করা।
তিনি আরো বলেন, সবার আগে নিজেদের সব সামর্থ্য দিয়ে মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমনটাই চিন্তা করছেন। এই মুহূর্তে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত ক্রয় নিয়ে আগানোর তেমন কোনো অগ্রসরতা নেই।
প্রায় ১০ বছর আগে একটি কার্যকর ও শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরির জন্য ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ বাস্তবায়নের কথা ঘোষণা করেছিল বর্তমান সরকার। প্রতিরক্ষা পণ্য ক্রয় বহুমুখীকরণ ছিল এর অন্যতম উদ্দেশ্য।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমাদের মৌলিক অবস্থান হচ্ছে, আমরা আমাদের পণ্য বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করতে চাই। আমরা সব ডিম এক ঝুড়িতে রাখতে চাই না।
তিনি আরো বলেন, প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত পণ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে চীনের পাশাপাশি নতুন অনেক উৎস এসেছে। ইউরোপ আমাদেরকে পণ্য সরবরাহে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তুরস্ক একটি নতুন সংগ্রহের স্থান। জাপানও একটি নতুন সরবরাহকারী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। রাশিয়া থেকে আমরা কিছু কিনেছি। কিন্তু বড় আকারে পণ্য ক্রয় করা হয়নি।
প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত পণ্য সংগ্রহের জন্য একটি দেশের ওপর বাংলাদেশ নির্ভরশীল হতে চায় না বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট (সিপরি)-এর তথ্যানুযায়ী ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রায় ৩৬৫ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা পণ্য ক্রয় করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে ২০১৯ সালে।