
আশাশুনি উপজেলার বেড়িবাঁধ। ছবি : সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, শ্রীউলা ও আশাশুনিসহ অনেক স্থানে বাঁধের অবস্থা খারাপ থাকলেও তিনটি পয়েন্ট সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ঘুর্ণিঝড় আসানির প্রভাবে এসব পয়েন্টের পরিস্থিতি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পর থেকে এলাকার মানুষ চিন্তিত হয়ে পড়েছে। তবে বিশেষ করে আশাশুনি ও প্রতাপনগর ইউনিয়নের মানুষ বেশি চিন্তিত।
স্থানীয়রা জানান, আশাশুনি সদরের দয়ারঘাট গ্রামে সুন্দরবন হ্যাচারি সংলগ্ন বেড়িবাঁধ অনেক নিচু হয়ে গেছে। সামান্য জোয়ারে কানায় কানায় ভরে ওঠে। আপাতত বালিভর্তি জিও ব্যাগ উঁচু করে দিলে জলোচ্ছ্বাসের জোয়ারে বাঁধ ছাপিয়ে লোকালয়ে পানি ঢোকার সম্ভাবনা নাই। অপরদিকে দয়ারঘাট গ্রামের মন্টু মণ্ডলের বাড়ির সামনে থেকে বলাবাড়িয়া গ্রামের বাবুরাম সানার বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৬৫০ মিটার ওয়াপদা বেড়িবাঁধ নেই। ১৯৯৫ সালে ভেঙে যাওয়ার পর প্রায় ২৫ বছর ধরে এভাবেই পড়ে আছে। বর্তমানে বলাবাড়িয়া বড়ঘেরর রাস্তা দিয়ে জোয়ারের পানি আটকানো হয়েছে।
এ রাস্তার পূর্ব পাশে নদী পর্যন্ত কয়েকটি মৎস্য ঘের আছে। ঘূর্ণিঝড় আসানির প্রভাবে চরের বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকতে পারে বলে এলাকাবাসী আশঙ্কা করছে। পানি ঢুকে গেলে মুহুরী, বিভূতি ভূষণ রায় ও তারক মণ্ডলের বাড়ির সামনের নিচু রিং বাঁধ ছাপিয়ে পানি আশাশুনি গ্রামে ঢুকতে পারে। তাই রিং বাঁধটিতে ঝড় আঘাত হানার আগেই মাটি অথবা বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে উঁচু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসী জোর দাবি জানিয়েছেন।
অপরদিকে প্রতাপনগরের কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চঘাট, মান্দারবাড়িয়া ও রুইয়ারবিলের বেড়িবাঁধের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। বড় ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানলে এসব স্থানে বাঁধ টিকে থাকা সম্ভব নয়।
এছাড়া শ্রীউলা ইউনিয়ন, আনুলিয়ায় বিছট এলাকায় বাঁধের অবস্থাও শঙ্কামুক্ত নয়। এসব স্থানসহ বুধহাটা ইউনিয়ন, বড়দল ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধে ঝুঁকি রয়েছে। বিষয়টি দ্রুত নজরদারিতে এনে প্রতিরক্ষার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন স্থানীয় লোকজন।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গত রবিবার (৮ মে) আসানি মোকাবেলায় প্রস্তুতিমূলক সভা করেছে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি।
কমিটির সদস্য সচিব প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহাগ হোসেন জানান, ৪নং সতর্কতা সংকেত না পাওয়া পর্যন্ত সাধারণত সভা আহ্বান করা হয় না। তবুও আমরা বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তুতিমূলক সভা করেছি। সভায় ইউপি চেয়ারম্যানদের দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে অনুরোধ করেছি।
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ানূর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় আসানির প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এর জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বারদের নিয়ে জরুরি সভা, নৌকা ও শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চিহ্নিত করে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। ট্যাগ অফিসার নিয়োগের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সব দুর্গত এলাকায় সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে।