Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের লক্ষ্য অর্জন হয়নি

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২২, ১৫:৩৯

নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের লক্ষ্য অর্জন হয়নি

পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি- সংগৃহীত

২০২১ সালের মধ্যে দেশের মানুষের জন্যে যে পরিমাণ নিরাপদ পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল তা অর্জন হয়নি বলে জানিয়েছে পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)।

আজ সোমবার (৩০ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘এডিপি বরাদ্দে আঞ্চলিক বৈষম্য: এসডিজি-৬ অর্জনে একটি বাধা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

‘২০২২-২৩ জাতীয় বাজেটে নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে বরাদ্দ’ শিরোনামে বাজেটপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, আমরা এমডিজি–পরবর্তী এসডিজির যুগে প্রবেশ করেছি। এসডিজির লক্ষ্যমাত্রার ধরনে কিছু মানগত পার্থক্য রয়েছে। এমডিজিতে শুধু পানি পাওয়ার লক্ষ্য ছিল। এসডিজির লক্ষ্য নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা। পানি পেলেই তা নিরাপদ নয়। দেশের ৯৮ শতাংশ মানুষ পানি পায়।

তবে ২০২১ সাল পর্যন্ত দেখা যায়, ৩৯ শতাংশ মানুষ নিরাপদ পানি পায়। নিরাপদ পানি নিশ্চিত করার জন্য বাড়তি কর্মসূচি, নজর লাগবে। মানসিকতায়ও নিরাপদ পানির বিষয়টি আনতে হবে।

এই মুহূর্তে দেশের মাত্র ৫৯ শতাংশ মানুষ নিরাপদ পানি পায়। আর নিরাপদ পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা আছে ৩৯ শতাংশ ক্ষেত্রে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য হাতে আর মাত্র আট বছর সময় থাকলেও ওয়াশ–সম্পর্কিত লক্ষ্যমাত্রাগুলোর অগ্রগতি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় অগ্রাধিকার সূচক অনুযায়ী নিরাপদ খাবার পানির ক্ষেত্রে শতভাগ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ২০২১ সাল পর্যন্ত জাতীয় অর্জন মাত্র ৫৯ শতাংশ।

এতে বলা হয়, স্যানিটেশন উপখাতেও অগ্রগতির বিষয়টি উদ্বেগজনক। এমডিজি–সময়ে উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ নির্মূলে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করে। জাতীয় অগ্রাধিকার সূচক অনুযায়ী শতভাগ মানুষের জন্য নিরাপদ স্যানিটেশন সেবার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে ২০২১ সাল পর্যন্ত অগ্রগতি মাত্র ৩৯ শতাংশ। তার মধ্যে গ্রামে ৪২ ও শহরে ৩৪ শতাংশ।

প্রতিবেদনে স্যানিটেশনে বাংলাদেশ সফলতা দেখালেও খোলা জায়গায় মলত্যাগ না করায় বাংলাদেশের যে সফলতা, তা অনেকে এখনো অর্জন করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন হোসেন জিল্লুর রহমান।

তিনি বলেন, এটা ছিল এমডিজি–যুগের একটা লক্ষ্য। এসডিজি–যুগে বাড়তি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে। সেটা হচ্ছে স্যানিটেশনের নিরাপদ ব্যবস্থাপনা। এটা আরও দুরবস্থায় আছে। এ ক্ষেত্রে অগ্রগতি ৩৯ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি বা হাইজিনের অন্যান্য মৌলিক নির্দেশকের অগ্রগতি মাত্র ৫৮ শতাংশ এবং ‘সাবান অথবা পানি ছাড়া’ নির্দেশকের জাতীয় অগ্রগতি মাত্র ৩৬ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নিচের দিক থেকে দ্বিতীয়।

অগ্রগতির এ মাত্রা বলে দেয়, বাংলাদেশকে পানি, নিরাপদ স্যানিটেশন ও পরিচ্ছন্নতার (হাইজিন) ক্ষেত্রে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আরো অনেক পথ পারি দিতে হবে।

বিশ্লেষণে দেখানো হয়েছে, এডিপির মোট বরাদ্দের (২৬৬,৭৯৩ কোটি টাকা) হিসাবে ২০২১-২২ অর্থবছরের বরাদ্দে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ ছিল ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ বা ১৪ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে অত্যন্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এসব এলাকায় বরাদ্দ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫ বছর আগের তুলনায় ৭২ শতাংশ কমেছে।

ওয়াশ খাতে বরাদ্দের ক্ষেত্রে ভৌগোলিক বৈষম্যের বিষয়টি প্রতীয়মান হয়েছে বিশ্লেষণে। দেখা গেছে, বিগত বছরগুলোয় প্রত্যন্ত এলাকা, চর, পাহাড়ি ও উপকূলীয় অঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলে সর্বোচ্চ শতাংশ তহবিল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অথচ অনুন্নত এসব এলাকায় বরাদ্দের প্রয়োজন শহরাঞ্চলের চেয়ে বেশি। তাই আসন্ন বাজেটে প্রান্তিক একালাগুলোর প্রয়োজন বিবেচনা করা উচিত বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ওয়াটারএইড বাংলাদেশ, পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি), ইউনসেফ বাংলাদেশ, ফানসা-বিডি, এফএসএম নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্টিগ্রিটি নেটওয়ার্ক (বাউইন), স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল, অ্যান্ড ওয়াটার পোভার্টি, এমএইচএম প্ল্যাটফর্ম, ইউনিসেফ এবং ওয়াশ অ্যালায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫