দীপ্ত মণ্ডল। ছবি : বরিশাল প্রতিনিধি
নিখোঁজের চারদিন পরে ডোবার মধ্যে বস্তাবন্দি অবস্থায় দীপ্ত মণ্ডল নামে আট বছর বয়সী শিশুর মরদেহ খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি শিশুটিকে হত্যা করে লাশ গুমের ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৩১ মে) ভোর সাড়ে ৫টায় উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের কাজিবাড়ীর পাশ্ববর্তী হারতা-সাতলা খাল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আটকরা হলেন- একই এলাকার রতন বিশ্বাস, তার স্ত্রী ইভা ও নয়ন শীল।
মৃত শিশু দীপ্ত কাজিবাড়ি এলাকার দীপক মণ্ডলের ছেলে এবং স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র বলে জানিয়েছেন উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আলী আর্শাদ।
তিনি বলেন, ২৭ মে রাত ১১টার দিকে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় দীপ্ত। এ ঘটনায় তার বাবা দীপক মণ্ডল ২৮ মে রাতে উজিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। দীপ্তের নিখোঁজের ঘটনায় প্রতিবেশী রতন বিশ্বাস ও নয়ন শীলের ওপর সন্দেহ করেন পরিবারসহ স্থানীয়রা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সোমবার (৩০ মে) গভীর রাতে হারতা বাজারের ছোট ব্রিজ এলাকায় নয়ন শীল পানি দিয়ে তার সেলুনের মেঝে পরিস্কার করছিল। যা স্থানীয়দের মাঝে সন্দেহ আরো বাড়িয়ে দেয়। দীপ্তর স্বজন ও স্থানীয়রা নয়ন শীল ও তার ঘর মালিক রতন বিশ্বাসকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে তারা দীপ্তকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
এসময় পুলিশকে খবর দিলে আজ ভোর সাড়ে ৫টায় হারতা বাজারের পার্শ্ববর্তী খাল থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় দীপ্তর লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়দের ধারণা নয়ন শীলের সেলুনের মধ্যে বসে দীপ্তকে হত্যা করা হয়। তালাবদ্ধ সেলুনের ভিতরে থাকা লাশে পচন ধরে গন্ধ বের হওয়ায় গতকাল গভীর রাতে বস্তাবন্দী করে খালে ফেলে দেওয়া হয়।
এদিকে, খবর পেয়ে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামানসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বলে জানিয়েছেন উজিরপুর থানার ওসি।
তিনি বলেন, আটকদের দেখানোমতে ডোবা থেকে শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া যে বাক্স ও ড্রামে শিশুটিকে হত্যার পরে রাখা হয়েছিল সেই ড্রাম ও বাক্স উদ্ধার করা হয়েছে। যাদের আটক করা হয়েছে তারাই হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছেন।
তবে কি কারণে হত্যা করা হয়েছে সে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে ওসি বলেন, রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। আজ বিকেল ৪টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে। তাছাড়া আটকদের এখনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।