Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

বেতন বৈষম্যের শিকার ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবীরা

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২২, ১৯:১৭

বেতন বৈষম্যের শিকার ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবীরা

প্রতীকী ছবি।

দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করে বেতন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবীরা। ২০১৫ সালে প্রদত্ত পে-স্কেলে বেতন দ্বিগুণের কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে ১-১০ গ্রেডের চাকরিজীবীদের সাথে ১১-২০ গ্রেডের টাকার অঙ্কে বৈষম্য বেড়েছে। ২০১৫ সালের পে-স্কেলে ১-১০ গ্রেডের চাকরিজীবীরা অনেক লাভবান হয়েছে। এমনিতেও বেতন পদোন্নতি ও সামাজিক মর্যাদায় ১-১০ গ্রেডের চাকরিজীবীরা বরাবরই এগিয়ে আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- একই পদে চাকরি নিয়ে সচিবালয়ে দায়িত্ব পালন করলে পদোন্নতিসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে ১-১০ গ্রেডের চাকরিজীবীরা। আর ১১-২০ গ্রেডের চাকরিজীবীরা অধিদপ্তরে দায়িত্ব পালন করলে কোনো পদোন্নতি পাচ্ছে না।  ১-১০ গ্রেডের চাকরিজীবীরা একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর পদোন্নতি পেলেও ১১-২০ গ্রেডের চাকরিজীবীরা অনেক ব্লক পোস্টের কারণে ১৫/২০ বছরেও পদোন্নতি পাচ্ছে না। কেউ কেউ পদোন্নতি পেলেও গ্রেডভিত্তিক বেতন বৈষম্যের কারণে আর্থিকভাবে কোনো প্রকার লাভবান হচ্ছে না।

বেতন বৃদ্ধি ও পদোন্নতি না হওয়ার কারণে ১১-২০ গ্রেডের চাকরিজীবীদের অনেকের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভ দানা বাঁধছে। একে অপরের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব তৈরি হচ্ছে। পদোন্নতি না পাওয়ার কারণে অনেক কর্মী কাজের প্রতি মনোযোগ হারিয়ে ফেলছে। 

২০১৫ সালে ৮ম পে-স্কেলের কারণে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাতিল করা হয়। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করে ১০ বছর ও ১৬ বছর চাকরির ধারাবাহিকতায় যে উচ্চতর গ্রেড প্রদান করা হয়েছিলো তাও আদালতে মামলাজনিত কারণে বন্ধ হয়ে আছে। এজন্য ২০১৫ সালের ৮ম পে-স্কেল এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। তাই ১১-২০ গ্রেডের চাকরিজীবীরা  নিয়োগকৃত গ্রেড থেকে উচ্চতর গ্রেড থেকে বেতন পাওয়ার সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরামের সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন- ১১-২০ গ্রেডের চাকরিজীবীরা বরাবরই বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। বর্তমান বাজারে দব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বিভিন্ন সেবাখাতের ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে আমাদের নিদারুণ কষ্ট হচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রভাব পড়েছে আমাদের মতো স্বল্পআয়ের কর্মচারীদের উপর। বেতন বৈষম্য নিরসনসহ ৮ দফা দাবি আদায়ে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাবর একাধিকবার স্মারকলিপি দিয়েছি। আসন্ন বাজেটে মহার্ঘ ভাতা ও নবম পে-স্কেল ঘোষণার মধ্য দিয়ে বেতন বৈষম্য দূর করে আমাদের সামাজিকভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ প্রদান করেন, তার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বরাবর বিনীত আবেদন জানাই। 

১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরামের সহ-সভাপতি মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন- ৮২০০/ বেতন স্কেলে পাঁচ সদস্যের পরিবারের জন্য প্রতিদিন ৫৪ টাকা করে পরে। এ ৫৪ টাকা দিয়ে প্রতিদিন একজন মানুষের পক্ষে তিন বেলা ডাল-ভাত খাওয়া কি আদৌ সম্ভব? পোষাকসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের কথা নাই বা বললাম। অথচ সরকারি উন্নয়ন এবং বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করার ব্যাপারে এসব সরকারি কর্মচারীদের অবদান সবচেয়ে বেশি।

১-১০ গ্রেডের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় গ্রেড বিন্যাসের মাধ্যমে স্বল্প ব্যবধান রেখে গ্রেড তৈরির কারণে বেতনবৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান। গ্রেড সংখ্যা কমিয়ে ও বর্তমানে বাজার ব্যবস্থার সাথে প্রচলিত ভাতাসমূহের সমন্বয়ের মাধ্যমে বৈষম্য কমানোর আবেদন জানান  তিনি। সেই সাথে টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড প্রদান, সচিবালয়ের মতো পদ-পদবী ও চাকরির অবসরত্তোর শতভাগ পেনশন প্রদানসহ ৮ দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্য সবিনয় অনুরোধ জানান তিনি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫