
দাহ্য পদার্থের বিস্ফোরণে হতাহত হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও। ইনসেটে বিএম কনটেইনার ডিপোর পরিচালক মজিবুর রহমান।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ডিপোর পরিচালক মজিবুর রহমান।
তিনি জানান, ভাটিয়ারী এলাকায় ওই ডিপোতে প্রায় ২০ হাজার কনটেইনার রয়েছে। আর বিস্ফোরণে বেশিরভাগই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ডিপোতে থাকা কিছু দাহ্য পদার্থ থাকা কনটেইনারে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই কনটেইনারে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড মজুত ছিল।
এ বিষয়ে স্মার্ট গ্রুপের মালিকানাধীন বিএম ও কনটেইনার ডিপোর পরিচালক মজিবুর রহমান বলেন, আমার তো সব শেষ হয়ে গেলো। এই আগুনে আমার ক্ষতি হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
তিনি বলেন, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ক্যামিকেল কখনো নিজে থেকে জ্বলে না। অতিরিক্ত হিটে আগুন ধরে ও বিস্ফোরিত হয়। রাসায়নিক পদার্থ ও গার্মেন্টস পণ্য থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করছি।
এজন্যে তিনি ফায়ার সার্ভিসকে দায়ী করে বলেন, তারা যদি সঠিক মতো কাজ করত তাহলে আমার কিছুই হতো না।
ডিপোতে শ্রমিকদের বিষয়ে মজিবুর রহমান বলেন, ডিপোতে শতাধিক শ্রমিক কাজ করতেন। এতে আহতদের চিকিৎসা খরচ বহন করছি আমরা। এছাড়া অন্য যেসব ক্ষতি হয়েছে তাদের কীভাবে সহযোগিতা করতে পারি তা নিয়েও কাজ চলছে। আমি নিজে হাসপাতালে রয়েছি। চট্টগ্রাম ও সীতাকুণ্ডের হাসপাতালগুলোতে আমাদের চিকিৎসাধীন কর্মীদের চিকিৎসা তদারকি করা হচ্ছে।
রাসায়নিকের তথ্য গোপন করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ফায়ার সার্ভিসের কাছে কোন তথ্য গোপন করিনি। এই মুহূর্তে নৈতিকতা ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে হতাহতদের পাশে থাকা বেশি প্রয়োজন। আমরা সেটাই করছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশে ১৯টি বেসরকারি কনটেইনার ডিপো রয়েছে। এসব ডিপোতে শতভাগ রপ্তানি পণ্য কন্টেইনার বোঝাই করে জাহাজীকরণের জন্য বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া খাদ্য পণ্যসহ ৩৮ ধরনের আমদানি পণ্য জাহাজ থেকে বন্দরে নামানোর জন্য সেগুলো ডিপোতে এনে খালাস করা হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের ১ থেকে ২৬ কিলোমিটারের মধ্যে এসব আইসিডির অবস্থান।
তবে এসব কনটেইনার ডিপোতে পিএসএসের (পোর্ট স্কিলস অ্যান্ড সেফটি পলিসি) গাইডলাইন অনুযায়ী আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নীতিমালা অনুসরণ করা হয় না।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান বলেন, প্রায় ২০ হাজার কনটেইনার ছিল ডিপোতে। এর মধ্যে বেশ কিছু কনটেইনারে দাহ্য পদার্থ ছিল। সেটির বিস্ফোরণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
যদিও বিএম কনটেইনার ডিপো সূত্র বলছে, ২০ হাজার কনটেইনারের মধ্যে অনেক কিছু খালি ছিল। এছাড়া বেশিরভাগ কনটেইনারে রপ্তানির জন্য আনা গার্মেন্টস পণ্য ছিল। এগুলো শুল্কায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রপ্তানি পণ্য জাহাজে ওঠাতে সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে নেওয়া হতো।
বিএম কনটেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষ বিস্ফোরক পরিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের মতো দাহ্য ক্যামিকেল মজুতের দাবি করলেও বিস্ফোরক পরিদপ্তর এই দাবিকে খারিজ করেছে।