আগামী ২৫ জুন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন। এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইতিহাসের অংশ হতে চান দক্ষিণাঞ্চলের লাখো মানুষ। ওইদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বরিশাল মহানগরীসহ বিভাগের ছয়টি জেলা এবং উপজেলা থেকে লক্ষাধিক মানুষ দলীয়ভাবে কাঁঠালবাড়ির সমাবেশে যোগ দিবেন।

সমাবেশে, বরিশাল বিভাগকে বিশেষভাবে জানান দিতেই এই আয়োজন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ। এজন্য সকল প্রস্তুতিও ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান তারা।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার (১৪ জুন) বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বরিশাল বিভাগীয় নেতৃবৃন্দের সাথে প্রস্তুতিমূলক মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দ এ কথা জানানো হয়।

মতবিনিময় সভায় বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদের প্রশাসক, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং পৌর মেয়রসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি এবং জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য, পার্বত্য শান্তিচূক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির মন্ত্রী মর্যাদায় আহ্বায়ক ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে এই পদ্মা সেতু কেবল শেখ হাসিনার দৃঢ় মনোবলের কারণেই তৈরি হয়েছে।

এই সেতু বরিশাল অঞ্চলের মানুষের জীবন ও জীবিকা বদলে দিতে ভূমিকা রাখবে। তাই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চল থেকে এক লাখ মানুষ অংশ নেবে। এজন্য সড়ক ও নৌপথে লঞ্চ এবং বাসের ব্যবস্থা কোথায় কিভাবে করা হবে সে বিষয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মতামত অনুযায়ী করার জন্যই এই বিভাগীয় মতবিনিময় সভার আয়োজন।

তিনি বলেন, ‘উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সাফল্যমন্ডিত করতে সবধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে বরিশালবাসী। কুয়াকাটা, পাথরঘাট থেকে ভূরঘাটা পর্যন্ত এলাকার মানুষ যাবে সেতু উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে। এই অঞ্চলের মানুষ কত খুশি তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। আগে ঢাকা যেতে সাত থেকে আট ঘন্টা সময় লাগতো, আর এখন পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যেতে সময় লাগবে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘন্টা। আর কি চাই আমাদের।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, ‘শিবচরের কাঁঠালবাড়ি মরহুম ইলিয়াস আলী চৌধুরী ফেরীঘাট প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১০ লাখ মানুষের সমাগম হবে।

পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিজস্ব অর্থায়নে তিনি পদ্মা সেতু নির্মাণ করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। এই পদ্মা সেতু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য বদলে দিবে। উন্নয়নের অন্যতম রাজধানী হবে বরিশাল।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, ‘পদ্মা সেতুর সবচেয়ে সুফলভোগী হবেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। এ কারণে দক্ষিণাঞ্চলে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। লঞ্চ-বাসসহ বিভিন্নভাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ইতিহাসের অংশ হতে চায় দখিনের লাখো মানুষ।

বরিশাল সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ চমক দেখানো হবে। সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে বরিশাল বিভাগের অংশগ্রহণ বিশেষভাবে দেশবাসী প্রত্যক্ষ করবে বলে প্রত্যাশা করেন মেয়র।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহে আলম, বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পংকজ নাথ, সাবেক চিফ হুইপ আ.স.ম ফিরোজ, বরগুনা সদর আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র নাথ শম্ভু, বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাসানুর রহমান রিমন, পটুয়াখালী-৩ আসনের এমপি এস এম শাহজাদা, পটুয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. মাহাবুবুর রহমান, ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল, ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নূরন্নবী চৌধুরী শাওন, পিরোজপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক মহিউদ্দিন মহারাজ প্রমুখ।

বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বরিশাল বিভাগের জেলা এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়রগণ উপস্থিত ছিলেন।