
অপকর্মের ঘটনায় আটককৃত ব্যক্তি। ছবি: জামালপুর প্রতিনিধি
জামালপুর শহরে পিটিআই সংলগ্ন পরিত্যক্ত বাসায় অনৈতিক কাজ করার সময় মোফাজ্জল হোসেন (৫০) নামে একজনকে বিবস্ত্র অবস্থায় নারীসহ আটক করেছে জনতা। পরে তাকে জুতাপেটা করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
আজ বুধবার (১৫ জুন) দুপুরে তাকে ২৯০ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে সদর থানার পুলিশ।
আটককৃত মোফাজ্জল জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের বড়শরা গ্রামের মৃত রাজ মাহমুদ ভূঁইয়া ওরফে আজম আলীর ছেলে।
মোফাজ্জল নিজেকে সাংবাদিক ও সম্পাদক পরিচয় দিয়ে সারা জেলায় নানা অপকর্ম করে আসছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভিকটিম (৪০) জবানবন্দিতে জানান, তিনি জামালপুর পৌর শহরের বানিয়া বাজার এলাকায় তবলাবাদক জহুরুল ইসলাম জনির প্রতিষ্ঠিত জনি একাডেমিতে গান শেখেন। মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাতে জনি তাকে সুকৌশলে পিটিআই সংলগ্ন পরিত্যক্ত বাসায় নিয়ে যান। এদিকে মোফাজ্জল হোসেন পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ওই বাসায় যান এবং নারীকে ধর্ষণ করেন।
এদিকে স্থানীয় জনতা ঘটনা টের পেয়ে বাসা ঘেরাও করে বিবস্ত্র অবস্থায় নারীসহ মোফাজ্জলকে আটক করে। এসময় সহযোগী জহুরুল ইসলাম জনি দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে জনতা মোফাজ্জল হোসেনকে পুলিশে সোপর্দ করে।
অভিযোগ রয়েছে, তবলাবাদক জনি গান শেখানোর নামে নারীদের এনে মোফাজ্জল হোসেনের হাতে তুলে দেন। অপরদিকে মোফাজ্জল হোসেন নিজেকে সাংবাদিক ও সম্পাদক পরিচয় দিয়ে মানুষদের ব্ল্যাকমেইল, বিভিন্ন দপ্তরে দালালি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে আসছিলেন। এর আগেও তিনি চাঁদাবাজি মামলায় ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি ছিলেন। দীর্ঘদিন হাজতবাস করে জামিনে আসেন। নামে-বেনামে একাধিক বিয়েও করেছেন তিনি।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় (জুডিসিয়াল মুন্সিখানা) সূত্র জানায়, মোফাজ্জল হোসেনের নবতান নামের একটি পত্রিকা ছিলো, সম্পাদকের নৈতিক স্খলনজনিত কারণে ২০১৪ সালে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পত্রিকাটির ডিক্লারেশন বাতিল করেন।
এদিকে পত্রিকাটির ডিক্লারেশন বাতিল হলেও তিনি পরিচয়পত্র বিক্রির বাণিজ্য অব্যাহত রাখেন। ইতোপূর্বে তার ছেলে ও পত্রিকার কথিত ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সায়েম শিমুল ইয়াবাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হন। তার ভাতিজা তারেক হাসান পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার পরিচয়ে শেরপুরের নকলায় চাঁদাবাজি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হন। এছাড়াও সম্পাদকের নির্দেশে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জেলার মেলান্দহে তার দুই প্রতিনিধি গ্রেপ্তার হন। মোফাজ্জল হোসেনের নৈতিক স্খলনের জন্য জামালপুর প্রেসক্লাবে তার প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
এব্যাপারে জামালপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী শাহনেওয়াজ জানান, মঙ্গলবার রাতে অপকর্ম চলাকালে স্থানীয় লোকজন নারীসহ মোফাজ্জল হোসেনকে আটক করে। তাকে ২৯০ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।