Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

রাজনৈতিক স্বার্থে ২১ দফার জাতীয় সনদ ঘোষণা সুজনের

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২২, ১৫:০৮

রাজনৈতিক স্বার্থে  ২১ দফার জাতীয় সনদ ঘোষণা সুজনের

সুজনের ৮ম জাতীয় সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। ছবি : সংগৃহীত

দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য ২১ দফার জাতীয় সনদ ঘোষণা করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। সংস্থাটির সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার সনদ উত্থাপন করেন।

আজ শনিবার (১৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলের ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের মাল্টিপারপাস মিলনায়তনে সুজনের ৮ম জাতীয় সম্মেলনে এই সনদ উত্থাপন করা হয়।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে একটি ঐক্যমত্য সৃষ্টি এখন সময়ের দাবি। স্বাক্ষরিত জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রথম পদক্ষেপ হবে একটি স্বল্প মেয়াদের নির্বাচনকালীন সরকার গঠন এবং আগামীতে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে যারা ক্ষমতায় আসবেন তারা এই ঐক্যমতের সনদ বাস্তবায়ন করবেন। আবার আর যেন একদিনের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না হয়।

সুজন সম্পাদক বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করার কাজ করছি ৷ আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি কিন্তু মুক্তি আসেনি। তাই আমরা একটা মুক্তির যুদ্ধে নিয়োজিত আছি। গণতন্ত্র, উন্নয়ন এবং সুশাসনের লক্ষ্যেই সুজনের সৃষ্টি।

তিনি বলেন, আমরা দুইবার স্বাধীন হয়েছি, কিন্তু দেশের মালিক হতে পারিনি। বাংলাদেশ আমলে আমরা হয়েছি পেট্রন ক্লায়েন্ট। আমরা ক্লায়েন্ট এবং পেট্রোন হচ্ছে আমাদের রাজনৈতিক নেতারা। আমরা যা কিছু পাই তা পাই তাদের অনুগ্রহের কারণে। তার মানে আমাদের নাগরিকত্ববোধ সৃষ্টি হয়নি। আমরা যা পাই তা আমাদের প্রাপ্য, অধিকার। দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে, অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে হবে।

এসময় তিনি সাংগঠনিক প্রতিবেদন ও রাজনৈতিক সমঝোতার লক্ষ্যে জাতীয় সনদের প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। জাতীয় সনদের প্রস্তাবনা প্রসঙ্গে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক যে সংকটের সম্মুখীন আমরা হয়েছি, তা কোনো একক দলের পক্ষে সমাধান সম্ভব না। আমাদের দরকার একটা জাতীয় সমঝোতা। সেই লক্ষ্যে আমরা ২১ দফা কর্মসূচি প্রণয়ন করেছি। এর উদ্দেশ্য হলো, এগুলো প্রাথমিক আলোচনার বিষয় ধরে নিয়ে রাজনীতিবিদ ও অংশীজনেরা আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে একটা জাতীয় সনদ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবেন। জাতীয় সনদের প্রথম পদক্ষেপ হবে একটা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।

জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত সম্ভাব্য ঐক্যমত্যের ২১ দফাগুলো হলোরাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন, নির্বাচনী সংস্কার, নির্বাচনকালীন সরকার, কার্যকর জাতীয় সংসদ, স্বাধীন বিচার বিভাগ, সাংবিধানিক সংস্কার, গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক দল, স্বাধীন বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, দুর্নীতি বিরোধী সর্বাত্মক অভিযান, প্রশাসনিক সংস্কার, বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় সরকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, শক্তিশালী নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার সংরক্ষণ, একটি নতুন সামাজিক চুক্তি, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, সাম্প্রদায়িক মানসিকতার অবসান, তরুণদের জন্য বিনিয়োগ, নারীর ক্ষমতায়ন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন।

সম্মেলনে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এ. টি. এম শামসুল হুদা বলেন, দেশে যখন এক এক করে সমস্ত প্রতিবাদী সংস্থা গুটিয়ে যাচ্ছে। সংসদে বিরোধী দলের লোকেরা সরকারের সমর্থন দেয়। পৃথিবীর কোথাও এমন সিস্টেম নেই। যুগ যুগ ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যে সংসদীয় গণতন্ত্রের সিস্টেম চালু হয়েছে, এখানে তার ব্যত্যয় দেখা যাচ্ছে। সাধারণকে প্রতিবাদ করতে হবে। গণতন্ত্রের জন্য সুশাসন জরুরি। গণতন্ত্র আরো শক্তিশালী করতে হবে।

বিচারপতি এম এ মতিন বলেন, বাংলাদেশে একনায়কত্ব থাকবে, মানুষের অধিকার থাকবে না, এর জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি। যেখানে অন্যায় হবে তার বিরুদ্ধে আমরা কথা বলব। নাগরিক সংগঠনের কর্তব্যই এটা।

সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। সুজনের সহসভাপতি ড. হামিদা হোসেনের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে আরো উপস্থিত ছিলেন ড. আকবর আলী খান, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসসহ প্রমুখ।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫