হাওরাঞ্চলের মানুষ আর দুর্ভোগ চায় না

জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া, সুনামগঞ্জ
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২২, ১৫:৩১

হাওরাঞ্চলের মানুষ ভালোভাবে বেঁচে থাকার অবলম্বন চায়। ছবি: সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
হাওরাঞ্চলের মানুষ ভালোভাবে বেঁচে থাকার অবলম্বন চায়। আর তাই সরকারের সহযোগিতার পাশাপাশি কিছু এনজিও, দাতা সংস্থা ও কিছু প্রতিষ্ঠান আবারও গবেষণা করছে। কিন্তু সহায়তা করেই যেন দায়িত্ব শেষ। দ্বীপসদৃশ গ্রামের অসহায় মানুষগুলো কতটুকু উপকৃত হচ্ছেন, তা নিয়ে কেউ ভাবছেন না। আসলে তাদের কেউই খোঁজ নিচ্ছে না। ফলে হাওরাঞ্চলের মানুষের না বলা কথাগুলো আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। তাই গবেষণা আর সহযোগিতার নামে আর দুর্ভোগ পোহাতে চায় না তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় সম্প্রতি ফেইস নামে একটি প্রতিষ্ঠান উপজেলার কয়েকটি গ্রামে বাঁশের ঘর তৈরি করে গরিব পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছেন। যার নাম তারা দিয়েছে খুদি বাড়ি। এ বাড়ি তৈরি করা হয়েছে বাঁশ, টিন ও কাঠ দিয়ে দোতলাবিশিষ্ট। রয়েছে দোতলায় ওঠার জন্য বাঁশের সিড়ি। উত্তর ও দক্ষিণ দিকে দুটি বড় জানালা। বর্ষায় নিচ তলায় পানি উঠে গেলে দোতলায় মানুষজন থাকতে পারবে। এ বাড়িগুলোর নকশা তৈরি করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থপতিরা।
এমনি একটি বাড়ি পেয়েছেন তাহিরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের রতনশ্রী গ্রামের বাসিন্দা জবেদা বেগম। তিনি জানান, এ বাড়িটি আমাকে দিয়েছে ফেইস নামে একটি প্রতিষ্ঠান। উপকার পেলেও বৃষ্টি হলে পানি ভেতরে ঢুকে বিছানা ভিজে যায়। ফলে ঘরে থাকা যায় না। আর বাঁশ ও কাঠে পোকা ধরছে। প্রবল বেগে তুফান হলে টিনের চালাগুলো উড়ে যাবার উপক্রম হয়। ফলে আতঙ্কের মধ্যে বাস করছি এখানে। একই কথা এই গ্রামের ঘর পাওয়া আছমা বেগম, শিল্পা বেগমসহ অনেকেরই।
জেলার সচেতন মহল বলেন, গবেষণার নামে এই অব্যবস্থাপনার দায় কার? আশা করব, হাওর অঞ্চলে ভবিষ্যতে এ ধরনের গবেষণা কাজ যেন বাস্তবসম্মত এবং জনবান্ধব হয়। অনেকে এই সুবিধা নিতে গিয়ে আর্থিক সুবিধাও নিচ্ছে গোপনে; কিন্তু সহায়তা পাওয়ার আশায় এ নিয়ে কেউ মুখ খুলছে না। দাতা সংস্থাগুলোর অর্থপুষ্ট প্রকল্পগুলো যেন জনগণের কষ্টের কারণ না হয়। সবার সার্বিক অংশগ্রহণ এবং দায়িত্বশীলতার চর্চা যেন এখানে থাকে, তার দাবি জানান হাওরাঞ্চলে বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে সহায়তা পাওয়া অসহায় মানুষগুলো।
এ বিষয়ে ফেইস নামে এ প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীল একজন জানান, নদী ভাঙন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের উপকারের জন্য এই খুদি বাড়ি দেওয়া হয়েছে। এটি আমাদের প্রথম গবেষণামূলক কাজ। এই প্রকল্পটি আরও কীভাবে ভালো আর উন্নত করা যায়, তা নিয়ে কাজ করছি। ঘরগুলোতে পানির কিছুটা সমস্যা আছে, তা ওই এলাকার উপকারভোগীরা আমাদের জানিয়েছে। সেগুলো তাদেরকেই সমাধান করতে হবে।